দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের ৮০ বছর পূর্তিতে বিজয় উৎসব করছে রাশিয়া। মস্কোতে শুক্রবার আয়োজন করা হয়েছে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান। যেখানে উপস্থিত থাকবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ ২০ শীর্ষ নেতা।
এ উপলক্ষে ইউক্রেনের সঙ্গে তিনদিনের ‘মানবিক যুদ্ধবিরতি’র ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ৯ মে কে বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে দেশটি।
রাশিয়ায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে ‘মহান দেশপ্রেমিক যুদ্ধ’ নামে স্মরণ করা হয়, যা শুরু হয় ১৯৪১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ওপর জার্মানির আক্রমণের মধ্য দিয়ে এবং শেষ হয় ১৯৪৫-এ জার্মানির আত্মসমর্পণের মাধ্যমে। বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের দুই কোটির বেশি মানুষ নিহত হয়। এ জাতীয় ট্র্যাজেডিকে বারবার সামনে টেনে আনেন পুতিন। ২৫ বছরের শাসনামলে তিনি ৯ মে-কে বানিয়েছেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবস, এবং নিজের সেনাবাহিনীকে তুলে ধরেন ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে’ রক্ষাকর্তা হিসেবে।
বার্তাসংস্থা এএফপি ও বাসস জানায়, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিৎসোসহ অন্তত ২০ জন বিদেশি নেতা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর এটিই রাশিয়ার চতুর্থ বিজয় দিবস উদ্যাপন।
জানা যায়, নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত বিজয়ের এই ৮০ বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে এ বছর হবে ‘এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় আয়োজন।’ এ উপলক্ষে ইউক্রেনের সঙ্গে তিনদিনব্যাপী ‘মানবিক যুদ্ধবিরতির’ ঘোষণাও দিয়েছে রাশিয়া।
তবে ইউক্রেন এই যুদ্ধবিরতিকে ভাঁওতাবাজি আখ্যা দিয়ে বলেছে, রাশিয়ার এই আয়োজন আসলে নির্লজ্জতার প্রদর্শনী। আর অংশগ্রহণকারী বিশ্বনেতারা বাস্তবিক অর্থে আগ্রাসনের সমর্থক।
সেনাসদস্যদের কুচকাওয়াজ শেষে বক্তব্য দেবেন পুতিন। ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর থেকে তিনি প্রায়ই রাশিয়ার বর্তমান সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের বিরুদ্ধে লড়াই করা সোভিয়েত বাহিনীর সঙ্গে তুলনা করেন।
অনুষ্ঠান ঘিরে মস্কোতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিষিদ্ধ করা হয়েছে ভ্যাপ পেন, বৈদ্যুতিক স্কুটার, এমনকি প্রাণীও। মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগও সীমিত করে রাখা হয়েছে ইউক্রেনীয় হামলার শঙ্কায়।
এর আগে ক্রেমলিনে বৈঠক করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি ও পুতিন। দীর্ঘ তিন ঘণ্টার আলোচনার পর পুতিন শিকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে অভিহিত করেন এবং দুই নেতা পশ্চিমা জোটবিরোধী বক্তব্য দেন।