জম্মু বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ, কাশ্মীরজুড়ে সাইরেন ও ব্ল্যাকআউট

ভারতশাসিত কাশ্মীরের জম্মু বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া কাশ্মীরজুড়ে ব্ল্যাকআউট এবং সাইরেনের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। 

জম্মু শহরের গুজ্জর নগর সেতুর কাছে এক প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেন, তিনি জম্মু বিমানবন্দরের কাছে ১৬টি বস্তু পড়ে থাকতে দেখেছেন। 

গত মঙ্গলবার রাত ১টার পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থাপনায় এই হামলা চালায় ভারত। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণে নিহত হন ৩১ জন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫৭ জন। অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে (এলওসি) পাকিস্তানি সেনারা গোলাবর্ষণ করে।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে উদ্ধৃত করে বিবিসি বলেছে, কাশ্মীরজুড়ে ব্ল্যাকআউট চলছে, লোকজনকে দৌঁড়াদৌড়ি করতে দেখা গেছে। সাইরেনের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, জম্মুতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে। এজন্য শহরজুড়ে এয়ার সাইরেন বাজে।

আরও পড়ুন:  উত্তেজনার মধ্যে সীমান্তের কাছে পাকিস্তানের সামরিক মহড়া

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেকগুলো সামরিক স্থাপনাকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করে। এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সব কটিই ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা) নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কাশ্মীরের অবন্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, অমৃতসর, কাপুরথালা, জলান্ধর, লুধিয়ানা, আদমপুর, ভাতিন্ডা, চণ্ডীগড়, নাল, ফালোদি, উত্তরলাই, ভুজসহ ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক বাহিনীর অনেকগুলো স্থাপনা লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল পাকিস্তান। সেগুলোর ধ্বংসাবশেষ এখন সংগ্রহ করা হচ্ছে।

এদিকে, ভারতের হামলার পর বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানান, এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি সু-৩০ ও অন্যটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। সু-৩০ ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সোভিয়েত আমলে তৈরি।

আরও পড়ুন:  কাশ্মীরে হামলায় জড়িতদের মধ্যে দুইজন পাকিস্তানি

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী এখন পর্যন্ত ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে এবং বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করা হচ্ছে। আইএসপিআর মুখপাত্র বলেন, ভারতীয় ড্রোনগুলো পাকিস্তানের লাহোর, গুজরানওয়ালা, চকওয়াল, অ্যাটক, রাওয়ালপিন্ডি, বাহাওয়ালপুর, মিয়ানওয়ালি, ছোড় এবং করাচির দিকে পাঠানো হয়েছিল।

গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। সেটাই পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *