জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।

এমনকি ভারত পাকিস্তানে হামলা করতে পারে বলে গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দেশটি। এমন অবস্থায় ভারতকে এই অঞ্চলে বৃহত্তর সংঘাত এড়াতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র চায় না দক্ষিণ এশিয়ায় আরও বড় কোনও সংঘাত ছড়িয়ে পড়ুক। শুক্রবার (২ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কাশ্মিরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পদক্ষেপ যেন পুরো অঞ্চলে বড় কোনও সংঘাতে রূপ না নেয়—এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় না এই হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ায় আরও বড় কোনো সংঘাত ছড়িয়ে পড়ুক।

আরও পড়ুন:  কাশ্মির ইস্যু: নিরাপত্তা পরিষদে যেভাবে কূটনৈতিক জয় পেল পাকিস্তান

ফক্স নিউজের ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমাদের আশা, ভারত এমনভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে যাতে এই ঘটনা থেকে কোনও বড় আঞ্চলিক সংঘাত তৈরি না হয়।”

তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র চায় পাকিস্তান এই হামলার জন্য দায়ীদের ধরতে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা করুক।

ভ্যান্স বলেন, “আমরা আশা করি, পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে সমন্বয় করবে, যেন তাদের ভূখণ্ডে সন্ত্রাসীরা থাকলে তাদের ধরা যায় এবং শাস্তি দেওয়া যায়। আমরা চাই এভাবেই বিষয়টির সমাধান হোক। আমরা ঘনিষ্ঠভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। দেখা যাক কী ঘটে।”

এমন মন্তব্যের পেছনে প্রেক্ষাপট হচ্ছে পাকিস্তানের সামরিক মহড়া, যা একদিন আগেই শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, দেশের সেনাবাহিনী পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ মহড়া চালিয়েছে, যেখানে আধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার ও যুদ্ধ কৌশলের প্রদর্শনী করা হয়েছে। এতে অফিসার এবং সৈনিকরা সক্রিয়ভাবে নিজেদের পেশাগত দক্ষতা প্রদর্শন করেন।

আরও পড়ুন:  ৩২ মিনিটে উত্তরা থেকে মতিঝিলে প্রথম মেট্রোযাত্রা

মূলত ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক বর্তমানে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। কাশ্মিরের ভারতশাসিত অঞ্চলে হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়ার অভিযোগ এনেছে।

পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তাদের জড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা “অমূলক” এবং ভারতের যেকোনও প্রতিক্রিয়ার জবাব দেওয়ার হুমকিও দিয়েছে দেশটি। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘও দুই দেশকে “সর্বোচ্চ সংযম” দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে, যেন সমস্যাগুলো “অর্থবহ পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা যায়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *