শফিকুল আলমের ৬ বিবির গল্প

শফিকুল আলম। বয়স আশির কোটায়। একজন আলোকিত মানুষ।  সারাজীবন রাজনীতি-ব্যবসায় নিয়েই জীবন কেটেছে তাঁর। আমেরিকায় সন্দ্বীপবাসীর কাছে  সুপরিচিত এবং সম্মানের পাত্র। তিনি এখন একা ভীষণ একা একজন মানুষ। সঙ্গী এখন ছয় সঙ্গী। এই শিশুদের বয়স ৫ থেকে ১১। তারা সবাই স্কুল-মাদ্রসাগামী। এদেরকে ভালোবেসে নাম দিয়েছেন বিবি। আছে বিবিদের সিরিয়ালও। এরা সবাই তাদের দাদুকে ভালবেসে সেবা করেন। ওদের সঙ্গে গল্প গুজবে মেতে থাকেন। এই শিশু-বিবিদের নিয়েই কাটছে তাঁর দিন-রজনী। তাদেরও আত্মার আত্মীয় এই গল্পের বুড়ো। এরা শফিক সাহেবের ভাড়াটিয়া। তার আঙিনায় কাটছে এদের সুন্দর শৈশব। এখানকার গাছপালা আর বিশাল অঙ্গন যেন এই শিশুদের বিকাশের ক্ষেত্র। 
 সফিক সাহেবের অসুস্থতায় এই শিশুরা কেঁদেছেন, কষ্ট পেয়েছেন। রোগ মুক্তির জন্য খোদার কাছে প্রার্থনা করেছেন। কিছুদিন আগে তিনি যখন অসুস্থ হন তখন এই শিশুরা তার জন্য অপেক্ষা করেন এবং দোয়া করেন যেন তিনি মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরে আসেন। হয়তো এ শিশুদের দোয়ার কারণে মানুষের অফুরন্ত শুভ কামনায় তিনি অসুস্থতা থেকে ফিরে এসেছেন সত্যি কিন্তু তিনি এখন ভীষণ একা।
এই কচি কমল শিশুরা শফিক সাহেবের নিত্যদিনের খেলার সঙ্গী। আজ শুক্রবার জুমার পর তারা সেজেছেন বর্ণিল সাজে। গতকাল বৃহস্পতিবার সবাইকে বধু সাজে দেখতে চেয়েছিলেন ৮০ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ তরুণ। জীবনের শেষ সায়ানে উপস্থিত হলেও তার মন এখনো চির তরুণ তিনি এখনো যেন ২৮ যুবক। এই শিশুদের তিনি আদর করে বিভিন্ন নামে ডাকেন তারাও এসব আদরের সাড়া দেন। শুক্রবার জুমার নামাজের পর দেখা গেল তা নিয়ে জানি নাই নতুন সাজে সবাই সেজে আছে। সবাইকে নিয়ে তিনি ফটোসেশনও করলেন। এই ছয় বিবির সঙ্গে আসলো আরো দুই শিশু পান্না বন্যা। এই দুই শিশুর নাকি তার দুই শালী। উপস্থিত সকলে এদেরকে বউ সাজে দেখে ভীষণ মজা পেলেন।
জীবনের তিনি মানুষ জমিয়েছেন। আড্ডা তার প্রধান অনুষঙ্গ। সারা জীবন তিনি মানুষের সাথে নিভীরভাবে মিশেছেন। মানুষকে ভালবাসেন নিরন্তর। ঠিক তেমনি মানুষও তাকে ভালোবাসে শিশু থেকে বৃদ্ধ অবনত মস্তকে সম্মান করে প্রবীণ এই মানুষটিকে। আজকের এই মুহূর্তটি ভীষণ দামি তাই এই শিশুদের সঙ্গে স্মৃতিটুকুন বেঁচে থাকুক অমলিন।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *