কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারতের প্রতিক্রিয়া ও কড়া অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তি স্থগিত ঘোষণা করেছে পাকিস্তান।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।

সিমলা চুক্তিতে দুই দেশ একে অপরের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অঙ্গীকার করেছিল। এ ছাড়া দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির কথা উল্লেখ রয়েছে, যেখানে যুদ্ধ পরিহারের বিষয়টি গুরুত্ব পায়।

ভূস্বর্গখ্যাত কাশ্মীর অঞ্চলে চুক্তির আলোকে দুই দেশ নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি বজায় রেখেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনায় উত্তেজনা বৃদ্ধির পর পাকিস্তানের এই সিদ্ধান্তে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

দুই দেশই পরমাণু শক্তিধর হওয়ায় এই অবস্থান আন্তর্জাতিক মহলকে উদ্বিগ্ন করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চুক্তি স্থগিত হওয়ার ফলে নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘাতের ঝুঁকি বাড়ছে।

আরও পড়ুন:  অভিজ্ঞতা নিতে কবরে রাত যাপন, আটক সহোদর ইউটিউবার

সিমলা চুক্তির মূল বিষয়বস্তু—১. সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি: উভয় দেশ পরস্পরের স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান দেখাবে। ২. শান্তিপূর্ণ সমাধান: বিরোধ মীমাংসায় যুদ্ধ নয়, বরং আলোচনার পথ বেছে নেওয়ার অঙ্গীকার। ৩. নিয়ন্ত্রণরেখার রক্ষণাবেক্ষণ: চুক্তির আওতায় কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বজায় রাখা এবং সেখানে যুদ্ধবিরতি রক্ষার নির্দেশনা। ৪. সম্পর্ক উন্নয়ন: কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চুক্তিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়।

চুক্তিটি ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা নানা পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছে।

ভারতের অভিযোগ, পহেলগাঁওয়ের হামলার পেছনে পাকিস্তানের ভূমিকা রয়েছে। জবাবে সন্ত্রাসে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে মোদী সরকার। এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারতের যেকোনো একতরফা পানি আটকে দেওয়ার উদ্যোগকে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

আরও পড়ুন:  নতুন চাঁদ দেখা গেলে যে দোয়া পড়া সুন্নত

চলমান পাল্টাপাল্টি অবস্থানে ভারত-পাকিস্তান কার্যত এক উত্তপ্ত পরিস্থিতির মুখে পড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *