জুলাইয়ে কক্সবাজার থেকে ‘উড়বে’ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট

চলতি বছরের জুলাই মাস থেকেই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দর।বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসসহ সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এরই মধ্যে নেওয়া হয়েছে।সোমবার (২১ এপ্রিল) বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সভায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইমিগ্রেশন পুলিশ, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও এয়ারলাইন অপারেটর কমিটির প্রতিনিধিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সিএএবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা জুলাই মাসে কক্সবাজার থেকে স্বল্প পাল্লার বিমানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকব।’তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক রুট চালু করার জন্য বিমানকে ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’২০২১ সালে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপ দেওয়ার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের আওতায় রানওয়ে সম্প্রসারণ, নতুন একটি টার্মিনাল ভবন নির্মাণ এবং বিমানবন্দরটিতে ২৪ ঘণ্টা ফ্লাইট পরিচালনার উপযোগী করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:  এখন পুরোপুরি সুস্থ গাইবেন টরন্টোতে
বেবিচক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী জুলাইয়ের মধ্যে রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ শেষ হবে। এই রানওয়ের ১ হাজার ৭০০ ফুট নির্মাণ হচ্ছে সমুদ্রের ওপর। সম্প্রসারণের পর রানওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ১০ হাজার ৭০০ ফুট বা ৩.২৬ কিলোমিটার। তৈরির পর এটিই হবে দেশের সবচেয়ে বড় রানওয়ে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী আপাতত বিমানবন্দরটির বর্তমান টার্মিনাল ভবন থেকেই আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো পরিচালিত হবে। নতুন আন্তর্জাতিক টার্মিনালটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর এখান থেকে বড় আকারের উড়োজাহাজগুলো পরিচালিত হবে।সিএএবি চেয়ারম্যান মঞ্জুর কবির বলেন, ‘অপারেশনাল প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে আমরা রানওয়ে, আলো ব্যবস্থা, সুরক্ষা বাঁধ ও টার্মিনাল অবকাঠামো ক্রমাগত পরিদর্শন করছি।’প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত শুক্রবার নির্মাণাধীন বিমানবন্দর প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন।

সরকারের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হলো কক্সবাজারকে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের মতো একটি শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা।

আরও পড়ুন:  স্বর্ণ কেনায় চীনকে টেক্কা তুরস্কের
বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের (বিটিবি) কর্মকর্তারা মনে করেন, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু হলে কক্সবাজার আঞ্চলিক পর্যটনের হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।চীনের ইউনান প্রদেশ কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে কুনমিংয়ে ফ্লাইট চালুর আগ্রহ দেখিয়েছে। স্থলবেষ্টিত এই প্রদেশটির পর্যটকদের জন্য কক্সবাজার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র হতে পারে।ট্যুর অপারেটস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি রাফিউজ্জামান বলেন, ‘স্থলবেষ্টিত দেশ যেমন নেপাল, ভুটান, উজবেকিস্তান এবং চীনে ইউনান প্রদেশের জন্য কক্সবাজার জনপ্রিয় একটি গন্তব্য হতে পারে। কারণ এটাই তাদের সবচেয়ে কাছের সমুদ্রসৈকত।’রাফিউজ্জামান মনে করছেন, কক্সবাজার থেকে কাঠমান্ডু, থিম্পু এবং কুনমিংয়ে সাপ্তাহিক ফ্লাইট চালু হলে পর্যটকের সংখ্যা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। অবশ্য বিদেশি পর্যটনদের আপ্যায়নে কক্সবাজারের অবকাঠামো ও বিনোদনের স্বল্পতার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

আরও পড়ুন:  শিক্ষাবিদ ছায়েদুল হক মেধাবৃত্তি পরীক্ষা-২০২৪ এর ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠান আগামীকাল

টোয়াব সভাপতি বলেন, ‘কক্সবাজারক আন্তর্জাতিক গন্তব্য হিসেবে জনপ্রিয় করতে হলে সরকারকে অবশ্যই বিদেশি পর্যটকবান্ধব অবকাঠামোসহ রাত্রিকালীন বিনোদনে বিনিয়োগ করতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *