গাজা সফর করা ভিসা আবেদনকারীদের সোশ্যাল মিডিয়া খতিয়ে দেখার নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে যারা ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা এরপর গাজায় সফর করেছিলেন তাদের স্যোশাল মিডিয়া একাউন্ট খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। বৃহস্পতিবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সকল কূটনৈতিক ও কনস্যুলার মিশনে এ সংক্রান্ত একটি তারবার্তা পাঠিয়েছে। খবর আল-জাজিরার।

গত ১৮ বছরে গাজা উপত্যকা সফর করেছেন—এমন বিদেশি মার্কিন ভিসা আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখতে দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্টকে নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

বেসরকারি সংস্থার কর্মী থেকে শুরু করে যারা সরকারি বা কূটনীতিক কাজে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটিতে গিয়েছিলেন তাদের জন্যও এটা প্রযোজ্য। যত অল্প সময় বা ক্ষণই সেখানে থাকেন না কেন তাদের এই যাচাই বাছাইয়ের মধ্যে পড়েতে হবে।

আরও পড়ুন:  হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি শাহরুখ খান

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাইয়ের ফলে নিরাপত্তা-সম্পর্কিত কোনো অবাঞ্ছিত তথ্য পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ভিসা আবেদনটি জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য তদন্তে পাঠানো হবে।

১৭ এপ্রিলের পাঠানো এই তারবার্তায়ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর স্বাক্ষর রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তার মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র তারবার্তাটি সম্পর্কে কিছু বলতে রাজি হননি। শুধু জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য প্রত্যেক আবেদনকারীকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কঠোর যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

এর আগে রুবিও সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, ২০২৫ সালের শুরু থেকে তার দপ্তর ইতোমধ্যে ৩০০টির বেশি ভিসা বাতিল করেছে। এর মধ্যে এমন ভিসাধারী ছাত্রও রয়েছেন, যারা ইসরাইলের গাজা আগ্রাসনের সমালোচনা করেছেন—যদিও মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, দেশটির অভ্যন্তরে অবস্থানকারী যেকোনো ব্যক্তির মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে।

আরও পড়ুন:  শরণার্থী শিবিরে অভিযান, গাজায় নিহত ২১ হাজার ছাড়াল

ট্রাম্প প্রশাসন এর আগে বলেছিল, এসব ছাত্রদের কর্মকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছেন। বিশেষ করে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ তীব্রতর হওয়ার পর।

গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবস্থান এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলার কারণে যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে শিক্ষার্থী ভিসায় দেশটিতে থাকা অনেককে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে, কাউকে আটকও করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তগুলো দেশজুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে।

বিশ্লেষকদের মতে, গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে দেশটির ভিসা ও শিক্ষানীতিতে বড় ধরনের রাজনৈতিক প্রভাব পড়ছে।

ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবস্থান এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলাকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থের জন্য হুমকি’ হিসেবে দেখছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *