‘বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ জেতে না’, চীনা প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরের সূচনায় চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাণিজ্যযুদ্ধ ও প্রোটেকশনিজমের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বাণিজ্যযুদ্ধের কোনো পক্ষই লাভবান হয় না এবং প্রোটেকশনিজম কোনো সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারে না।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় সফরে ভিয়েতনাম পৌঁছানোর আগে দেশটির সরকারি দৈনিক ‘ন্যান দান’-এ প্রকাশিত এক প্রবন্ধে শি বলেন, বহুপক্ষীয় বাণিজ্যব্যবস্থার উন্নয়ন, বৈশ্বিক শিল্প ও সরবরাহ শৃঙ্খলের স্থিতিশীলতা এবং উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক পরিবেশ রক্ষায় চীন ও ভিয়েতনামকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

শি জিনপিংয়ের এবারের সফরে মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়াও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি ২০২৫ সালে তার প্রথম বিদেশ সফর। চীন এ সফরের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির প্রভাব মোকাবেলার পাশাপাশি আঞ্চলিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চায়।

আরও পড়ুন:  মস্কোয় কনসার্টে ভয়াবহ হামলায় নিহত ১৪৩, আইএসের দায় স্বীকার

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সফর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে চীনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ মোড়’।

চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, প্রবন্ধে শি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, ‘শুল্ক আরোপ ও বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতায় কোনো পক্ষই দীর্ঘমেয়াদে জিতে না। প্রোটেকশনিজম ক্ষতিকর ও অবাস্তব।’

২০২৪ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে চীনের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার ছিল ভিয়েতনাম। সে বছর ভিয়েতনাম চীনের কাছ থেকে ১৬১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল মালয়েশিয়া, যার আমদানির পরিমাণ ছিল ১০১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজার সংকুচিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য জোরদার করে চীন সেই নেতিবাচক প্রভাব কিছুটা প্রশমিত করতে চায়।

আরও পড়ুন:  বিশ্ব যুব উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব

সোমবার ও মঙ্গলবার শি ভিয়েতনামে অবস্থান করবেন। এটি ডিসেম্বর ২০২৩-এর পর তার প্রথম সফর। বর্তমানে চীন ও ভিয়েতনামের মধ্যে ‘সর্বাত্মক কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ সম্পর্ক বিদ্যমান, যা হানোয়ের পররাষ্ট্রনীতিতে সর্বোচ্চ মর্যাদা।

তবে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় হলেও দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে ভিয়েতনামের উদ্বেগ রয়েছে।

শি জিনপিং তার প্রবন্ধে এই বিষয়ে বলেন, ‘চীন ও ভিয়েতনাম আলোচনার মাধ্যমে মতবিরোধ দূর করতে পারে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারে।’

তিনি আরও লেখেন, ‘যথাযথ দূরদৃষ্টি ও আন্তরিকতা থাকলে, আমরা সামুদ্রিক বিরোধগুলো সমাধানে পারস্পরিক পরামর্শ ও আলোচনার মাধ্যমে সফল হতে পারি।’

ভিয়েতনাম সফর শেষে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করবেন। মালয়েশিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী ফাহমি ফাদজিল বলেছেন, এই সফর দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে সহায়ক হবে।

আরও পড়ুন:  জাতিসংঘ ৪৬ দিনে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত করবে

সফরের শেষ গন্তব্য কম্বোডিয়া, যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে চীনের প্রভাব অনেকটাই বেড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *