২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে আশ্রয় চেয়ে করা আবেদনের সংখ্যা তার আগের বছরের তুলনায় অন্তত ১১ শতাংশ কমেছে। সম্প্রতি বার্ষিক আশ্রয়বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইইউর আশ্রয় সংস্থা (ইইউএএ)।

সোমবার প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে মোট ১০ লাখ ১৪ হাজার আশ্রয় আবেদন জমা হয়েছে। ২০২৩ সালের তুলনায় সংখ্যাটি ১১ শতাংশ কম।

ইইউর কড়াকড়ি অভিবাসননীতি, সীমান্ত নিরাপত্তা বাড়ানো ও বৈশ্বিক অভিবাসন প্রবাহে পরিবর্তনকেই আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা কমার কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।২০২৪ সালে ইইউতে সিরিয়া, আফগানিস্তান, ভেনিজুয়েলা, তুরস্ক, কলম্বিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত, রাশিয়া ও ইরান থেকে সর্বাধিকসংখ্যক আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে। সিরিয়ার এক লাখ ৫১ হাজার নাগরিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন। তারাই আশ্রয় আবেদনে শীর্ষে রয়েছেন।

আরও পড়ুন:  ভিসানীতি কঠোর করছে যুক্তরাজ্য
আফগানিস্তানের নাগরিকরা জমা করেছেন ৮৭ হাজার আবেদন। আগের বছরের তুলনায় ২৪ শতাংশ কমেছে আফগানদের সংখ্যা।এ ছাড়া অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তুরস্ক থেকে ৫৮ হাজার, কলম্বিয়া থেকে ৫৩ হাজার ও ভেনিজুয়েলা থেকে ৬০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে।

প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারতের আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি, তবে দেশটি থেকেও অভিবাসনের ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদন
এদিকে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে আশ্রয় নেওয়ার হার ২০২৪ সালেও উল্লেখযোগ্য ছিল। বাংলাদেশি অভিবাসীদের প্রধান গন্তব্য দেশ ইতালি। ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে অনিয়মিত উপায়ে ইউরোপে প্রবেশের হারও বেড়েছে। ইতালি ছাড়াও বংলাদেশিরা ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ডে বিপুলসংখ্যক আশ্রয় আবেদন জমা দিয়েছেন।

২০২৪ সালে মোট ৪৩ হাজার ২৩৬ জন আশ্রয়প্রার্থী বাংলাদেশ থেকে ইইউতে আশ্রয় আবেদন করেছেন, যাদের মধ্যে ৪১ হাজার ৩২৫ জন ব্যক্তি প্রথমবারের মতো ইইউতে আশ্রয় চেয়েছেন।

আরও পড়ুন:  বাংলাদেশে ফিরতে চলেছে পাক সেনা! গভীর উদ্বেগে ভারত
তবে মোট সংখ্যার মধ্যে মাত্র ৪ে শতাংশ আশ্রয়প্রার্থী ২০২৪ সালে রিফিউজি স্ট্যাটাস বা শরণার্থী মর্যাদা পেয়েছেন।এ ছাড়া গত বছর বাংলাদেশিদের আবেদনের মধ্যে ২৬ হাজার ৩৭৩টি আবেদন নিষ্পত্তি করে সিদ্ধান্ত দিয়েছে ইইউ দেশগুলো। সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে ৪৭ হাজার ৭৭৮টি আশ্রয় আবেদন। এগুলোর মধ্যে ২০২৪ সাল ছাড়াও আগের আবেদনও রয়েছে।

গত বছর তিন হাজার ১১৭ জন বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থী তাদের আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন বলে ইইউএএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন লিবিয়া, তুরস্ক ও অন্যান্য ট্রানজিট দেশের সঙ্গে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। এর ফলে ব্লকে আশ্রয় আবেদনকারীদের সংখ্যা সামগ্রিকভাবে কমেছে। তবে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নাগরিকরা এখনো ইউরোপে নতুন সুযোগের সন্ধানে রয়েছেন।

আরও পড়ুন:  বাংলাদেশে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু আদানির

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *