নিম্ন জন্মহারের নতুন রেকর্ড জাপানে

নিম্ন জন্মহারে নতুন রেকর্ড করেছে এশিয়ার উন্নত দেশ জাপান। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে জন্ম নিয়েছে মাত্র ৭ লাখ ২০ হাজার ৯৮৮ জন শিশু। আগের বছর দেশটিতে জন্মেছিল ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৩১ জন শিশু, যা এর আগে সর্বনিম্ন ছিল। খবর এএফপি, রয়টার্সের

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে জাপানে মৃত্যু হয়েছে ১৬ লাখ ২০ হাজার মানুষের। সেই হিসেবে গত বছর প্রতি একজন শিশুর জন্মের বিপরীতে মারা গেছেন ২ জনেরও বেশি মানুষ।

৩ লাখ ৭৭ হাজার ৯৭৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশ জাপানের মোট জনসংখ্যা ১২ কোটি ৩৫ লাখ ৪০ হাজার। বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটিতে বাৎসরিক জন্ম-মৃত্যুর রেকর্ড রাখা শুরু হয় ১৮৯৯ সাল থেকে। ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাপানে জন্ম নিয়েছিল ২০ লাখ ১০ হাজার জন শিশু। এখন পর্যন্ত এটি জাপানে এক বছরে সর্বোচ্চসংখ্যক শিশুর জন্মহারের রেকর্ড।

আরও পড়ুন:  ভোটার হতে সাত দেশ থেকে ৪২ হাজার প্রবাসীর আবেদন

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে ২০২৩ সালে জাপানে জন্মেছিল ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৩১ জন শিশু। ২০২৪ সালের আগ পর্যন্ত এটিকে এক বছরে সর্বনিম্ন জন্মহারের রেকর্ড হিসেবে বিবেচনা করা হতো। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে জাপানে শতকরা হিসেবে জন্মহার কমেছে ৫ শতাংশ।

বছরের পর বছর ধরে নিম্ন জন্মহারের কারণে বর্তমানে ‘প্রবীনদের দেশ’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি জাপান। বর্তমানে দেশটির মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের বয়স ৬৫ বছরের বেশি।

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা দেশটির ধারাবাহিক নিম্ন জন্মহার নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। একবার তিনি বলেছিলেন, বাৎসরিক নিম্ন জন্মহার যদি অব্যাহত থাকে— তাহলে ২০৫০ সালে ‘জাপানি’ বলে পৃথক কোনো জাতিস্বত্ত্বার অস্তিত্ব থাকবে না। জন্মহার বাড়াতে ২০২৩ সালে শিশুকল্যাণ খাতে ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার বরাদ্দও দিয়েছিলেন তিনি। জাপানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা সম্প্রতি বলেছেন, জনসংখ্যা সমস্যাকে তার সরকার অগ্রাধিকার দেবে।

আরও পড়ুন:  কাশ্মিরের হামলাস্থলে সাংবাদিকদের যেতে বাধা ভারতের

তবে বাস্তবে কাজের কাজ তেমন হচ্ছে না। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, অতিমাত্রায় ব্যস্ত জীবন, স্থবির অর্থনীতি, শিশুপালন ও শিক্ষার উচ্চমূল্য এবং পরিবর্তনশীল জীবনযাত্রা তরুণ প্রজন্মকে ক্রমশ পরিবার গঠন ও সন্তানধারণে নিরুৎসাহিত করে চলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *