রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নিন্দায় যুক্তরাষ্ট্রের অস্বীকৃতি

সোমবার জাতিসংঘের তিনটি প্রস্তাব আনা হয় যেখানে যুদ্ধের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে সংঘাতের অবসান চাওয়া হয়। এই প্রস্তাবে ইউক্রেন আক্রমণ নিয়ে রাশিয়ার নিন্দা করতে অস্বীকৃতি জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

ফলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে ইউরোপীয় মিত্রদের মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।

এর আগে মস্কোর আগ্রাসনকে চিহ্নিত করে এবং অবিলম্বে রুশ সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ইউক্রেন একটি প্রস্তাব আনে। প্রস্তাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে একজোট হয়ে ভোট দেয়।

এরপর ফ্রান্সের নেতৃত্বে ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়াকে আক্রমণকারী হিসেবে চিহ্নিত করায় বিকল্প একটি প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রস্তাবটি যুক্তরাষ্ট্রই একটি বিকল্প প্রস্তাব হিসেবে উপস্থাপন করেছিল যেখানে ইউরোপীয়রা সংশোধনী হিসেবে রাশিয়াকে আক্রমণকারী হিসেবে চিহ্নিত করার বিষয়টি যুক্ত করে।

আরও পড়ুন:  সেনাপ্রধানের বক্তব্য নিয়ে যা বললেন উপদেষ্টা সাখাওয়াত

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ প্রথমে ৯৩-১৮ ভোটে ইউক্রেনের প্রস্তাব অনুমোদন করে, যেখানে ৬৫টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। এই ফলাফল ইউক্রেনের প্রতি কিছুটা কমে আসা সমর্থনকে প্রতিফলিত করে, কারণ আগের ভোটে ১৪০টিরও বেশি দেশ রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে সেনা প্রত্যাহার ও ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল সংযুক্তির প্রত্যাহারের দাবি করেছিল।

পরে ফ্রান্স তিনটি সংশোধনী প্রস্তাব করে, যা ইউরোপের একাধিক দেশের সমর্থন পায়। এই সংশোধনীগুলোতে উল্লেখ করা হয় যে এই সংঘাত রাশিয়ার দ্বারা ইউক্রেনের ‘পূর্ণ মাত্রার আক্রমণের’ ফলাফল। এগুলো ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, ঐক্য ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি সাধারণ পরিষদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে এবং জাতিসংঘ সনদের ভিত্তিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়।

রাশিয়াও একটি সংশোধনী প্রস্তাব করে, যাতে সংঘাতের ‘মূল কারণগুলো’ নিরূপণ করার আহ্বান জানানো হয়।

আরও পড়ুন:  মহান মে দিবস আজ

সব সংশোধনী পাস হয় এবং সংশোধিত প্রস্তাবটি ৯৩-৮ ভোটে গৃহীত হয়, যেখানে ৭৩টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। ইউক্রেন ‘হ্যাঁ’ ভোট দেয়, যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে বিরত থাকে, এবং রাশিয়া ‘না’ ভোট দেয়।

এর আগে ট্রাম্প অভিযোগ করেন ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু করেছে এবং হুঁশিয়ারি দেন জেলেনস্কি যদি দ্রুত আলোচনা করে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে না পারেন, তাহলে তার দেশ শাসনের মতো অবস্থায় থাকবে না। এর জবাবে জেলেনস্কি বলেন, ট্রাম্প রুশ প্রচারযন্ত্রের ‘ভুল তথ্যের জগতে’ বাস করছেন।

এই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক প্রস্তাবগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রতিফলন ঘটায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *