নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়ো বাংলাদেশের জন্য বিপদজনক হবে: ব্রিটিশ এমপি

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সংসদ সদস্য রূপা হক বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্য চায় বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের স্বচ্ছ নির্বাচন হোক। তবে এর জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কার থাকতে হবে। যদি খুব তাড়াহুড়া করা হয়, সেটি বাংলাদেশের জন্য বিপদজনক হবে।’ 

বুধবার বিকেলে রাজধানীর অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য রূপা হককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।২০১৭ সালের পর গত বছর মে মাসে জাতিসংঘের একটি বৈঠকে যোগ দিতে বাংলাদেশে এসেছিলেন জানিয়ে রূপা হক বলেন, ‘সে সময় আমি দেখেছি  বাংলাদেশ-১। আর এখন বাংলাদেশ-২ দেখছি। মে মাসে যখন এসেছিলাম, তখন সব জায়গায় শুধু দুটি ছবি দেখেছি।

একটি হাসিনার আরেকটি মুজিবের ছবি। এটি ভালো অভ্যাস নয়। সব জায়গায় মূর্তি দেখেছি। বিষয়টি দৃষ্টিকটু লেগেছে।
বাংলাদেশ উদীয়মান দেশ। যুক্তরাজ্যের তুলনায় এটি অনেক ছোট্ট দেশ। কিন্তু এখানে কর্মক্ষম তরুণ জনশক্তি আছে। তাদের রাষ্ট্র সংস্কারে কাজে লাগাতে হবে।’তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনও আমাকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আমন্ত্রণ জানায়নি।

আরও পড়ুন:  ৫৭ জনের বহর নিয়ে নিউ ইয়র্ক যাবেন ড. ইউনূস
গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে অবশ্য আসল নির্বাচন ছিল না, বরং নকল নির্বাচন ছিল। অধ্যাপক ইউনূস নিশ্চিত করেছেন এক বছরের মধ্যে আশা করা যায় যে নির্বাচন হবে। একটি সত্যিকারের স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে একইসঙ্গে সত্যিকারের স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামোগুলো থাকতে হবে। যদি খুব তাড়াহুড়া করা হয়, সেটি বাংলাদেশের জন্য বিপদজনক হবে।’টিউলিপ সিদ্দিকের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমার বাংলা খুব ভালো না, তবে সম্প্রতি আমি নতুন কিছু বাংলা শব্দ শিখেছি, যেমন দুর্নীতি। আমার এক সহকর্মীর সম্পর্কে ব্রিটিশ সংসদে দুর্নীতি সংক্রান্ত কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আমি জানি না কোথায় এ পয়সা গিয়েছে। এটি বাংলাদেশের জনগণের অর্থ। আমাদের যুক্তরাজ্যে দুর্নীতি সংক্রান্ত আইন ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে অনেক কারণে এসব আইনের প্রয়োগ নেই। তবে এগুলোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।’

আরও পড়ুন:  একজন শুদ্ধাচারী রাজনৈতিক কমরেড মুজফ্‌ফর আহমদ

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে রূপা হক বলেন, ‘ব্রিটিশ গণমাধ্যম যা জানায়, তা যদি বিশ্বাস করেন, তাহলে আপনি জানবেন বাংলাদেশের রাস্তায় বিশৃঙ্খলা চলছে, কোনো পুলিশ নাই। বেশ কিছু ব্রিটিশ সংসদ সদস্য সেগুলো তুলে ধরে বলেছিলেন বাংলাদেশ জ্বলছে। তবে আমি সফর করে দেখছি যে, বাংলাদেশ শান্তি ও স্থিতি বিরাজ করছে। তবে ঢাকা শহরের সব সময়ে জ্যাম রয়েছে।’

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে অনেক মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আবু সাঈদের কথা শুনেছি। তাদের মতো শিক্ষার্থীদেরও হত্যা করা হয়েছে। এগুলো শুধু অপরাধই নয়, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি মোহাম্মদ শামসুল আলম লিটন, সম্মানিত অতিথি হিসেবে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক আ ন ম এহসানুল হক মিলন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সচিব মো. কামরুজ্জামান লিটু উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও জুলাই–আগস্ট আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।

আরও পড়ুন:  ৪ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপলো নিউইয়র্ক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *