সাবেক কোন কোন মন্ত্রীর দপ্তর পুড়েছে

প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত পৌনে দুইটার দিকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট। প্রায় ৬ ঘণ্টা চেষ্টার পর বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ধারণা করা হচ্ছে, ওই ভবনে থাকা মন্ত্রণালয়গুলোর বহু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এরই মধ্যে পুড়ে গেছে। এ ভবনের আটতলা ও নয়তলায় রয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়- যা আওয়ামী সরকারের আমলে দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আওতাধীন ছিল। সরকার পতনের কয়েকদিন আগে থেকে কোনো রকম হদিস নেই প্রতাপশালী এই নেতার, গুঞ্জন রয়েছে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

আরও পড়ুন:  কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ

3

আটতলায় আরও রয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, যা সাবেক সরকারের আমলে ছিল জুনাইদ আহমেদ পলকের অধীনে। তিনি ছিলেন এই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে, সরকার পতনের কয়েকদিনের মাথায় ধরা পড়েন পলক, বর্তমানে রয়েছেন কারাগারে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ও ছিল, সাততলাজুড়ে ও আটতলার কিছু অংশে। আওয়ামী সরকারের আমলে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন মোঃ তাজুল ইসলাম, সরকার পতনের পর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি তারও।

Capture

সচিবালয়ের আটতলায় থাকা আরেক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় হলো অর্থ মন্ত্রণালয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান আবুল হাসান মাহমুদ আলী, হাসিনার পতনের পর হদিস নেই এই নেতার। তার আগে এই মন্ত্রণালয় সামলেছেন আ হ ম মোস্তফা কামাল, সরকার পতনের কিছুদিন আগেই পরিবারসহ পালিয়েছিলেন কামাল।

আরও পড়ুন:  পদোন্নতি-পদায়ন নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা

ছয়তলায় রয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, যা ছিল নাজমুল হাসান পাপনের অধীনে। তবে কোথায় আছেন সাবেক এই বিসিসি সভাপতি তা জানা নেই কারও। পাঁচতলা ও ছয়তলায় আরও রয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, এই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন নজরুল ইসলাম চৌধুরী, অনেকের মতো তিনিও সরকার পতনের পর পলাতক। ভবনের পাঁচতলায় পুড়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়। চারতলায় আগুন লাগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ বিভাগে।

12

সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেছেন, সচিবালয়ে আগুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট ও নয়তলা। সেখানে থাকা নথিপত্র পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:  সৎমায়ের মামলায় শাওনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

এদিকে, বাংলাদেশ সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সাত সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রশাসন ও শৃঙ্খলা শাখার এক অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *