মিয়ানমারের রাখাইনে জান্তার আঞ্চলিক কমান্ড বিদ্রোহীদের দখলে

মিয়ানমারের জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী রাখাইন রাজ্যের একটি সামরিক আঞ্চলিক কমান্ড দখল করেছে। এটাকে জান্তার জন্য একটি বড় মাপের ধাক্কা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

এএফপি’র খবরে জানা যায়, কয়েক সপ্তাহের লড়াইয়ের পর শুক্রবার আরাকান আর্মি (এএ) অ্যান—এ জান্তার পশ্চিমাঞ্চলীয় আঞ্চলিক কমান্ড ‘সম্পূর্ণভাবে দখল’ করে নিয়েছে। ওই গ্রুপটি তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক বিবৃতিতে একথা বলেছে। পাঁচ মাসের মধ্যে অ্যান হচ্ছে-  মিয়ানমারের সামরিক জান্তার দ্বিতীয় আঞ্চলিক সামরিক কমান্ড, যা জাতিগত বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দেশজুড়ে ১৪টি আঞ্চলিক কমান্ড রয়েছে। ২০২১ সালে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর লড়াই এখনো চলছে।

গত বছরের নভেম্বরে আরাকান আর্মি মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীকে আক্রমণ করার পর থেকে রাখাইন রাজ্যে লড়াই শুরু হয়েছে। আরাকান আর্মি যোদ্ধারা রাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করে নিয়েছে, যেখানে চীন এবং ভারত-সমর্থিত বন্দর প্রকল্প রয়েছে এবং তারা রাজ্যের রাজধানী সিতওয়েকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। আরাকান আর্মি তাদের হেফাজতে থাকা এক ব্যক্তির ছবি পোস্ট করেছে, যাকে বলা হয়েছে অ্যান ডেপুটি আঞ্চলিক কমান্ডার। তবে এএফপি সেই তথ্য নিশ্চিত করতে পারেনি। তারা মন্তব্যের জন্য আরাকান আর্মি’র মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এএফপি অ্যানের আশেপাশে থাকা লোকদের কাছেও পৌঁছাতে পারেনি, কারন সেখানে ইন্টারনেট এবং ফোন পরিষেবাগুলো বিচ্ছিন্ন।

আরও পড়ুন:  পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ২৬ বেসামরিক নিহত

মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অসংখ্য জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে, যারা স্বাধীনতার পর থেকে স্বায়ত্তশাসন ও লাভজনক সম্পদের নিয়ন্ত্রণের জন্য সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করেছে। গত মাসে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছিল যে রাখাইন রাজ্য দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে, কারণ চলমান সংঘর্ষে বাণিজ্য ও কৃষি উৎপাদন স্থবির হয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রয়েছে। যদি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার বর্তমান মাত্রার সমাধান না করা হয়, তাহলে ২০২৫ সালের মাঝামাঝি দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *