শিশুর প্রস্রাবে সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয়

শিশুর প্রস্রাবে সংক্রমণ সমস্যাটি খুব বেশি মাত্রায় পাওয়া যায়। এমনকি নবজাতক বয়সেও এ সমস্যা হতে পারে। জন্মের প্রথম বছরে মেয়েদের এ সমস্যা ছেলেশিশুর দ্বিগুণ পরিমাণে পাওয়া গেলেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি ছেলেদের তুলনায় ১০ গুণ পর্যন্ত বেশি হতে দেখা যায়। মূলত অনেক ধরনের ব্যাকটেরিয়া এ সমস্যার জন্য দায়ী হলেও ই কোলাই নামে জীবাণু সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়।  

প্রস্রাবে সংক্রমণকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। কিডনির মধ্যে সীমাবদ্ধ (পায়েলোনেফ্রাইটিস) এবং প্রস্রাবের থলিতে (সিসটাইটিস) সংক্রমণ।

কিডনির মধ্যে সীমাবদ্ধ সংক্রমণে শিশুর জ্বর, গা ম্যাজম্যাজ, পেটে, পিঠে বা কোমরে ব্যথা, বমি ভাব, বমি থাকতে পারে। নবজাতকের ওজন ঠিকমতো না বাড়া, কম খেতে পারা, খিটখিটে থাকা, এমনকি দীর্ঘ মাত্রায় জন্ডিস থাকলেও প্রস্রাবে সংক্রমণ সন্দেহ করতে হয়। পক্ষান্তরে, প্রস্রাবের থলিতে সংক্রমণ হলে শিশুর প্রস্রাব করতে গেলে ব্যথা, প্রস্রাব আটকিয়ে রাখতে না পারা, বারবার, তীব্র চাপ নিয়ে বেগ পাওয়া, দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব এবং তলপেটে নিচের দিকে ব্যথা হতে পারে।
পাশাপাশি অনেক শিশুর তেমন লক্ষণ ছাড়াও প্রস্রাবে সংক্রমণ হতে দেখা যায়।

আরও পড়ুন:  স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন

প্রস্রাবে সংক্রমণ প্রতিরোধে কিছু নিয়ম জেনে রাখতে পারবেন। কারণ, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ জরুরি। যেমন–
১. নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
২. কোমল পানীয়, বোতলজাত জুস, অতিরিক্ত লবণসমৃদ্ধ পানীয় এবং খাবার পরিহার করতে হবে।
৩. নিয়মিত স্বাভাবিক মলত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. প্রস্রাব আটকিয়ে রাখা যাবে না। এ জন্য বিদ্যালয়ে বেগ হলে যেতে হবে। একটানা মনিটরের (টিভি, মোবাইল, গেমস) সামনে বসে থাকা যাবে না; কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে হবে।
৫. আঁটসাঁট অন্তর্বাস বা প্যান্ট পরা অনুচিত।
৬. নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ সেবন করতে হবে।
৭. ঘন ঘন ডায়রিয়া, অপুষ্টি থাকলে চিকিৎসা এবং পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে হবে।
৮. ছেলেশিশুর খতনা করলে সংক্রমণ কম হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
৯. মেয়েশিশুর শুচি করার সময় সামনে থেকে পেছনে টান দিয়ে মুছে দিতে হবে।
১০. অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক উপকারী জীবাণু মেরে ফেলে সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
১১. শরীরের অন্য সমস্যার জন্য সংক্রমণ হচ্ছে কিনা দেখতে হবে।
মনে রাখবেন, প্রস্রাবে সংক্রমণ নির্ণয় এবং চিকিৎসা ঠিকমতো না করলে দীর্ঘমেয়াদি কিডনির অসুখ হয়, যা পরে কিডনি অকার্যকর করে ফেলতে পারে।

আরও পড়ুন:  ‘কিছু কিছু দল বোঝানোর চেষ্টা করছে মুক্তিযুদ্ধ কোনো ঘটনাই ছিল না’

লেখক : রেজিস্ট্রার,  আইসিএমএইচ, মাতুয়াইল, ঢাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *