অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ২০২১ সালের এপ্রিলে ডি-৮-এর চেয়ারের পদ গ্রহণের পর থেকে বেশ চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ডি-৮ সহযোগিতাকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) মিশরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষাপটে আমরা প্রথমে সীমাবদ্ধতা ও বাধা-বিপত্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছি,  এরপর ‘বহুবিধ সংকট আমাদের অনেক দেশকে নানাভাবে ভুগিয়েছে।

বাংলাদেশের বিদায়ী চেয়ার হিসেবে ড. ইউনূস ১১তম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নেতাদের স্বাগত জানান।

তিনি ঐতিহাসিক কায়রো নগরীতে নিখুঁত আয়োজন ও সদয় আতিথেয়তা প্রদানের জন্য আগামী চেয়ারম্যান ও সম্মেলন আয়োজক দেশ মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিকে উষ্ণ অভিনন্দন জানান।

আরও পড়ুন:  চলতি বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচনের পরিকল্পনা আছে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি, অগ্রগতি ও সহযোগিতার জন্য সংগঠনের নীতির প্রতি অবিচল অঙ্গীকারের প্রেক্ষিতে আমাকে অবশ্যই মিশর সরকারের প্রশংসা করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ডি-৮-এর চেয়ার থাকাকালে ডি-৮ ইয়ুথ কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা এবং ডি-৮ অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি অনুস্বাক্ষরের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখের দাবি রাখে।

ড. ইউনূস বলেন, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অকুণ্ঠ সমর্থন ও সামষ্টিক স্বার্থ অনুধাবন ছাড়া এটি অর্জন করা  সম্ভব হতো না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের চেয়ারম্যানশিপে সমর্থন এবং আমাদের সম্মিলিত স্বার্থকে এগিয়ে নিতে যে অঙ্গীকার দেখানো হয়েছে তার জন্য বাংলাদেশ ডি-৮-এর সকল সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ।

তিনি বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে মিশরের কাছে চেয়ারম্যান পদ হস্তান্তর করার এই লগ্নে আমি এই শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘যুবকদের জন্য বিনিয়োগ ও এসএমইকে সহায়তা করা’- নির্ধারণের জন্য প্রেসিডেন্ট এল-সিসি’র প্রশংসা করছি। এটি ডি-৮-এ আমাদের লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

আরও পড়ুন:  পর্দা উঠলো অমর একুশে বইমেলার

প্রধান উপদেষ্টার মতে, ডি-৮ দেশগুলোকে অবশ্যই ভবিষ্যতের অর্থনীতিতে যুব ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত কর্মক্ষেত্রের পরিবর্তনশীল প্রকৃতির আলোকে শিক্ষাকে পুনরায় আবিষ্কার ও তার অবস্থান পুনঃনির্ধারণ করতে হবে।

তিনি বলেন, পরিস্থিতি খুব দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে যায়। ফলে সরকারের পক্ষে তা অনুধাবন এবং কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু সমস্যা মোকাবেলায় আমাদের প্রচেষ্টার সমন্বয় সাধন অব্যাহত রাখতে হবে।

ড. ইউনূস বলেন, মিশরের কাছে বাংলাদেশের দায়িত্ব হস্তান্তরের এই মুহূর্তে আমি চেয়ার হিসেবে আমাদের সহযোগিতামূলক অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে মিশরের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছি।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট আল-সিসির বিজ্ঞ নেতৃত্বে মিশর বাংলাদেশের ওপর আস্থা রাখতে পারে।

ড. ইউনূস বলেন, মিশরের নেতৃত্বে ডি-৮ বিকশিত হোক এবং সদস্য দেশগুলোকে একটি অনিশ্চিত বিশ্বে বৃহত্তর স্বাধীনতা, স্থিতিশীলতা, সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *