তাবলীগ জামাতের দুগ্রুপের দ্বন্দ্বের কারণ কী?

গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক। তাবলীগ জামাতের ভেতরে এ দু’টি গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছে বেশ কয়েক বছর ধরেই।   

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদ কান্ধলভী তাবলীগ জামাতে এমন কিছু সংস্কারের কথা বলছেন – যা নিয়ে মূলত তাবলীগ জামাতের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে।

সাদ কান্ধলভীর মতে, ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় প্রচারণা অর্থের বিনিময়ে করা উচিত নয় – যার মধ্যে মিলাদ বা ওয়াজ মাহফিলের মতো কর্মকাণ্ড পড়ে বলে মনে করা হয়। তিনি বলেন, মাদরাসাগুলোর শিক্ষকদের মাদরাসার ভেতরে নামাজ না পড়ে মসজিদে এসে নামাজ পড়া উচিত – যাতে মানুষের সাথে যোগাযোগ বাড়ে।

আরও পড়ুন:  ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলায় বাংলাদেশের উদ্বেগ

এছাড়া অভিযোগ উঠেছে সাদ কান্ধলভী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় কোরআন, হাদিস, ইসলাম, নবী-রাসুল ও নবুয়্যত এবং মাসআলা-মাসায়েল নিয়ে আপত্তিকর বয়ান করেছেন। যার জন্য দেওবন্দসহ বিশ্ব আলেমদের অনেকেই এসব বয়ানের জন্য প্রকাশ্যে তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন।

মাওলানা জুবায়েরপন্থীরা বলছেন, সাদ কান্ধলভী যা বলছেন – তা তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা নেতাদের নির্দেশিত পন্থার বিরোধী। তাদের বক্তব্য কান্ধলভীর কথাবার্তা আহলে সুন্নাত ওয়া’ল জামাতের বিশ্বাস ও আকিদার বাইরে।

কান্ধলভীর সমর্থকরা বলছেন, তাদের নেতার বক্তব্য বা সংস্কারের প্রস্তাব মানতে না পেরেই বাংলাদেশে সংগঠনটির কর্মকাণ্ডকে রাজনৈতিক চেহারা দেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় উপমহাদেশে সুন্নি মুসলমানদের বৃহত্তম সংগঠন এই তাবলীগ জামাতের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্য রূপ পায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে।

আরও পড়ুন:  শিক্ষার্থীরা হলে ফেরার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান
ওই সময় তাদের মূল কেন্দ্র কাকরাইলে দুই দল কর্মীর মধ্যে হাতাহাতি হয়।এর পর ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমীর শাহ আহমদ শফীর উপস্থিতিতে তাবলীগ জামাতের একাংশের এক সম্মেলন হয় । এতে সাদ কান্দালভীকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মাওলানা সাদ কান্ধলভী ভারতীয় আলেম। তিনি তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা হজরত ইলিয়াস শাহ (রহ.) এর নাতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *