বিদ্রোহীদের কাছে পরাজিত হয়ে দেশ ছাড়ার আটদিন পর মুখ খুলেছেন সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। তার একটি বিবৃতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো প্রচার শুরু করেছে।

বিবৃতিতে আসাদ বলেন, আমি কখনও সিরিয়া ছাড়তে চাইনি। আমার প্রস্থান পরিকল্পিত ছিল না। আবার কেউ কেউ যেমনটি দাবি করছেন যে, লড়াইয়ের শেষ মুহূর্তে এটি ঘটেছে, তেমনও কিছু হয়নি। বরং আমি ওই সময়ে দামেস্কেই ছিলাম। আমার কাজ করে গেছি গত ৮ ডিসেম্বর রোববার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। খবর বিবিসির।

সোমবার সিরিয়ান প্রেসিডেন্সি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে বিবৃতিটি পোস্ট করা হয়। আসাদের কাছ থেকেই এটি এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট এখন কার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তাছাড়া, এই বিবৃতি আসাদই লিখেছেন কিনা স্পষ্ট নয় সেটিও।

আরও পড়ুন:  পূর্ব সিরিয়া থেকে সরবে না মার্কিন বাহিনী : পেন্টাগন

আরবি ও ইংরেজিতে লেখা ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ৮ ডিসেম্বর সকালে আসাদ সিরিয়ার হেইমিমে রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে গিয়েছিলেন যুদ্ধ প্রস্তুতি দেখতে। সে সময় ঘাঁটিতে হামলা হওয়ার পর রাশিয়া তাকে সেখান থেকে চলে যাওয়ার অনুরোধ জানায়। কিন্তু ঘাঁটি ছেড়ে চলে যাওয়ার কোনো উপায় না থাকায় সেখানকার সেনা কমান্ড ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যাতেই অবিলম্বে আসাদকে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে এবং সেখানে চলে যাওয়ার জন্য আসাদকে অনুরোধও জানায় মস্কো।

শীর্ষ সামরিক অবস্থানগুলো ভেঙে পড়ার পর দামেস্কর পতনে রাষ্ট্রের অবশিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান অচল হয়ে পড়লে রাশিয়ায় যাওয়ার এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

এতে আরও বলা হয়, ওইসব ঘটনা ঘটতে থাকার সময় আমি কোনোভাবেই পদত্যাগ করা কিংবা আশ্রয় খোঁজার কথা ভাবিনি। কোনো মানুষ কিংবা কোনো দলও এ ধরনের কোনো প্রস্তাব দেয়নি। দেশ সন্ত্রাসীদের হাতে চলে যাওয়ার পর অর্থবহ কোনো অবদান রাখার সক্ষমতাই খোয়া যায়। আর প্রেসিডেন্ট হিসাবে আমার অবস্থানেরও আর কোনো মানে ছিল না।

আরও পড়ুন:  সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে, ইরান না পাকিস্তান

ইসলামপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের ১২ দিনের ঝড়ো অভিযানের মুখে দামেস্কের পতনের পর সিরিয়ার কোনো নগরী কিংবা প্রদেশে আসাদের দেখা মেলেনি। সে সময় জল্পনা ছড়ায় তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

এমনকি সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রীও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। এরপর ৯ ডিসেম্বরে রাশিয়ার গণমাধ্যম জানায়, তাকে সেখানে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *