সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের ৬ মামলা

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সাবেক তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম ও তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে পৃথক ৬ টি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে দুদক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সংস্থার মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।

তিনি বলেন, সাবেক এই তিন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এসব মামলা দায়ের করা হয়। কমিশনের অনুমোদনে বৃহস্পতিবার তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

দুদকের মহাপরিচালক জানান, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে ৬১ কোটি ৪২ লাখ ৫৬ হাজার ৪২৬ টাকা এবং তার ছেলে রাহাত মালেকের বিরুদ্ধে ১১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৪ হাজার ১৬১ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। একই সাথে জাহিদ মালেকের ৩৪টি ব্যাংক হিসাবে পরস্পর যোগসাজস্যে ১৪৩ কোটি ১০ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯৭ টাকা জমা এবং ১১৫ কোটি ৮৫ লাখ ৬ হাজার ৪৬৫ টাকা উত্তোলনসহ সন্দেহজনক অসংখ্য লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া জাহিদ মালেক তার ছেলে রাহাত মালেকের নামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খুলে ওই প্রতিষ্ঠান এবং নিজ ও তার প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যবহৃত ব্যাংক হিসাবে মোট ৬৬৮ কোটি ৭১ লাখ ১৮ হাজার ৬৬৩ টাকা জমা ও ৬৬৬ কোটি ৫৬ লাখ ৬৩ হাজার ১৬২ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সন্দেহজনক অসংখ্য লেনদেন করেছেন।

আরও পড়ুন:  ফজরে ইরানী পোশাকে জয়া

তিনি জানান, ছেলে রাহাত মালেক ছাড়াও মামলায় আরও আসামি করা হয়েছে জাহেদ মালেকের স্ত্রী শাবানা মালেক, পুত্রবধূ সাকিবা মালেক, মেয়ে সাদিয়া মালেক ও সিনথিয়া আকমলকে। স্ত্রী শাবানা মালেকের নামে ৩ কোটি ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৮২৭ টাকা, পুত্রবধূ সাকিবা মালেকের নামে ৯ কোটি ২৮ লাখ ৯৪ হাজার ৫৪৫ টাকা, মেয়ে সাদিয়া মালেকের নামে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৯৮ হাজার ৩২ টাকা, সিনথিয়া আকমলের নামে ২ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার ২৯৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।

মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন জানান, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৭৩ লাখ ৪৭ হাজার ৪২ টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও ২৫টি ব্যাংক হিসাবে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৩২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা জমা এবং ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৫ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অস্বাভাবিক লেনদেন করেছেন। অপরদিকে তার স্ত্রী আরিফা জেসমিনের নামে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৯৩ হাজার ৪৩৩ টাকা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ পাওয়া যায়। তার নামে ৩১টি ব্যাংক হিসাবে ২২ কোটি ৩৪ লাখ ৭১ হাজার ৯৭৯ টাকা জমা এবং ১৭ কোটি ৫৬ লাখ ৮২ হাজার ৮৭৭ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন:  সিংহাসন হারিয়ে পাঁচে নেমে গেলেন সাকিব

তিনি জানান, সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের নামে-বেনামে এবং তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৬৭ হাজার ২০০ টাকা এবং তার মেয়ে মির্জা আফিয়া আজম অপির নামে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যদিকে তার স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার নামে একাধিক ফ্ল্যাট ছাড়াও তার নিজের নামে ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানির নামে ৬০টি ব্যাংক হিসাবে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৭২৫ কোটি ৭০ লাখ ৪২ হাজার ২৩২ টাকা জমা ও ৭২৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৩ হাজার ৭১৫ টাকা উত্তোলনপূর্বক অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। দেওয়ান আলেয়ার নামে ২৩ কোটি ৭৭ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *