ডিসি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে উপদেষ্টা কমিটি গঠন

জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টাকে আহ্বায়ক এবং স্বরাষ্ট্র ও তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টাকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, ৩ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, জেলা প্রশাসক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করতে হবে এবং ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এ পদক্ষেপটি প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

গত ৩ অক্টোবর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের যে অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখতে ‘হাই-লেভেল’ বা উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে।

আরও পড়ুন:  দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ১৪তম

তিনি বলেন, আমরা খতিয়ে দেখছি। রিপোর্টের সত্যতা কতটুকু? আমরা ফ্রিডম অব প্রেসকে বিশ্বাস করি। হাই-লেভেল কমিটি হবে। রিপোর্ট ঠিক ছিল কি না, যে অভিযোগ উঠেছে সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে।

প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব বলেন, জনপ্রশাসন সচিবকে নিয়ে দৈনিক কালবেলাতে একটা প্রতিবেদন এসেছে। এটা নিয়ে আমরা খতিয়ে দেখছি। এই রিপোর্টটার সত্যতা কতটুকু? আমরা আশা করব পত্রিকাগুলো তাদের নিউজ প্রেজেন্টেশনে কোনোরকম ডিজ-ইনফরমেশন ছড়াবে না। এটা নিয়ে হাই-লেভেল একটা কমিটি হবে। এই কমিটিতে সিনিয়র কিছু জার্নালিস্ট ইনক্লুড করতে চাচ্ছি। রিপোর্টটা ঠিক ছিল? নাকি প্রতিবেদনের যে এলিগেশনগুলো আসছে তা খতিয়ে দেখছি। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা অ্যাকশনে যাব।

একইদিন সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ জানান, জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। বিষয়টি তদন্তের জন্য তিনজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:  বাংলাদেশে বিনিয়োগে বাধা ঘুষ, দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা: যুক্তরাষ্ট্র

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ নিয়ে ফাঁস হয়েছে এক ভয়াবহ কেলেঙ্কারির তথ্য। এ নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং বিতর্কিত দুই যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও আলী আযমের সরাসরি জড়িত থাকার তথ্য সামনে এসেছে। সেই সিনিয়র সচিবের সঙ্গে এক যুগ্ম সচিবের হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথনে সম্প্রতি ডিসি নিয়োগ নিয়ে বড় ধরনের আর্থিক লেনদেনের তথ্যও উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথনের একপর্যায়ে নিজেকে নির্লোভ দাবি করেন সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান। টাকা-পয়সার প্রতি কোনো লোভ নেই জানিয়ে ডিসি নিয়োগে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করেন তিনি। তাদের এ সংক্রান্ত কথোপথনের কিছু স্ক্রিনশট রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহলেও ঘুরপাক খাচ্ছে, যা নিয়ে প্রশাসনের ভেতরে ব্যাপক তোলপাড় চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *