রাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ গনঅভূত্থানে শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পলায়নের পরে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তোপের মুখে পরে পদত্যাগ করেছিলো রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাঞ্চন চাকমা।
গত ১৮ আগস্ট রাতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য এই পদত্যাগপত্র ই-মেইলে জমা দিয়েছিলো বলে শিক্ষার্থীদের নিশ্চিত করেছিলো তৎকালীন রাবিপ্রবির শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোসাঃ হাবিবা।
কিন্তু পদত্যাগের পঞ্চাশ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো নতুন উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য আসার নামগন্ধও নেই। বরং প্রশাসন বিহীন রাবিপ্রবির বিভিন্ন কার্যক্রম দিন দিন নানা জটিলতায় নিমজ্জিত হচ্ছে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন আটকে থাকার সমস্যা সাময়িক সমাধান হলেও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির মুখে পরছে শিক্ষার্থীরা।
অভিভাবকহীন রাবিপ্রবিতে ক্লাস, পরীক্ষা ঠিকভাবে না হওয়ায় দীর্ঘ সেশনজটের আশংকায় দিনপাত করছেন তারা। প্রশাসন বিহীন রাবিপ্রবির বর্তমানের এই অবস্থার জন্য শিক্ষকদের একাংশকে দায়ী করছেন কিছু শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে প্রায় অনেক শিক্ষার্থী নিজেদের হতাশা ও আক্ষেপের কথা তুলে ধরছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী জানান। “উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিষয়ে আমরা কিছু জানতাম না। হঠাৎ সিনিয়রদের ফোন পেয়ে আমরা একত্রিত হই। তার পর যা হওয়ার তাই হলো। রাবিপ্রবি পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত।চাইলেও সমতলের মতো হবে না। এখানে যা কিছু হয় তা খুব ধীর গতিতে। এখানে অনেক সমস্যার কারণে সহজেই কোন উপাচার্য আসতে চান না। তাই আন্দোলনে যাওয়ার আগে আমাদের চিন্তা করা উচিত ছিল প্রশাসনের পদত্যাগ আমাদের জন্য কতটুকু দরকার। অভিভাবকহীন ক্যাম্পাসে এখন আমরা এক সেমিস্টারে প্রায় নয় মাস ধরে আটকে আছি। আবার প্রশাসনের সাক্ষরবিহীন ফলাফল না হওয়ায় আমাদের সামনের দিনগুলো অন্ধকার হবে। বর্তমান সরকারের উচিত আমাদের দিকে সুনজর দেয়া তবেই এই বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যেতে পারবে।উপাচার্য দ্রুত নিয়োগে যদি আন্দোলনের প্রয়োজন হয় তবুও আমরা তাই মেনে নিবো। অবশ্য এই বিষয়ের সাথে অনেক শিক্ষার্থী ভিন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন।
এর আগে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত ১১ আগস্ট তৎকালীন উপাচার্য রেজিস্ট্রারকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে চলবে সে বিষয়ে শিক্ষক নেতাদের প্রশ্ন করলে তাঁরা জানান,”ডিপার্টমেন্ট চালায় ডিপার্টমেন্ট এর চেয়ারম্যানরা।পরিস্থিতি যেমন হোক একাডেমিক কার্যক্রম যথাযথভাবে চালিয়ে নিবো আমরা।”
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন বিভাগ তাদের কথা পাল্টিয়েছে। ক্লাস,পরীক্ষা বিহীন রাবিপ্রবির কিছু বিভাগ যেন এখন জনশূন্য। কাজের চাপ না থাকায় প্রশাসন বিহীন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বেশির ভাগ সময় অলস সময় পার করছেন।