বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আশ্বাস দিয়েছেন যে, চীন সরকার সব সময় বাংলাদেশের জীবনমান উন্নয়নে সহযোগিতা করে যাবে। আজ রবিবার সকালে সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ইয়াও ওয়েনের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও উপস্থিত ছিল।
বৈঠকে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খাতে চীনের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দুর্নীতি, অন্যায়-অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সব সময় অনমনীয় থাকবে, যা ছাত্র-জনতার সম্মিলিত ত্যাগের ফল।
চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “চীন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার এবং আমরা সব সময় বাংলাদেশে জনগণের উন্নয়ন হয়, এমন প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।” তিনি আরও জানান, বিগত সময়ে চীন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এ সময় তিনি বর্তমানে বাংলাদেশে চলমান চীনা প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুততম সময়ে শেষ করতে এই সরকারের সহযোগিতা চান। ফাওজুল কবির বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে অনেক জনকল্যাণমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি অ্যাক্টের (বিইআরসি) ৩৪(ক) ধারা বাদ দিয়ে গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা, ভবিষ্যতে বিভিন্ন কাজের দরপত্র উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে আহ্বান করা এবং এ ক্ষেত্রে কারও সঙ্গে কোনও বিশেষ চুক্তি বা সুবিধা প্রদান না করা অন্যতম।’
এই সময় উপদেষ্টা বর্তমানে দেশের গ্যাস-সংকট উত্তরণে ল্যান্ড বেসড গ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণ, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম তৈরি ও ট্রেনের লোকোমোটিভ ক্রয়ে চীন সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা চান।
উপদেষ্টা চীনের চলমান প্রকল্পগুলোর ব্যাপারে সব প্রয়োজনীয় সহযোগিতার ব্যাপারে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করে উল্লেখ করেন, এই সরকার খরচ কম করে কাজের গুণগত মান বজায় রেখে গ্রাহক সেবার ওপর জোর দিচ্ছেন। এছাড়া উপদেষ্টা সড়ক, সেতু, রেল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিভিন্ন প্রকল্পে চীন সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা চেয়েছে।
এতে চীনা রাষ্ট্রদূত গ্রিন এনার্জি খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে বলেন এবং অন্য খাতগুলোয় অগ্রাধিকারমূলক ভিত্তিতে যাচাই করে সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার ব্যাপারে উপদেষ্টাকে আশ্বস্ত করেন।