ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, যা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতি ভারতের মনোভাবের একটি ইঙ্গিত দেয়। দিল্লিতে একটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এই মন্তব্য করেন, যা ইন্ডিয়া টুডে এবং মানি কন্ট্রোলের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
জয়শঙ্কর বলেছেন যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন স্বাভাবিক এবং এ ধরনের পরিবর্তন প্রায়ই অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ভারতের জন্য বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা গুরুত্বপূর্ণ এবং উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষায় নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে ভারত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক সবসময় একটি ধাঁধার মতো এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে মুক্ত নয়। তার এই মন্তব্যে বোঝা যায় যে, ভারতের কূটনৈতিক নীতি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে জটিলতা এবং প্রতিযোগিতাকে গুরুত্ব দেয়।
এস জয়শঙ্করের এই বক্তব্যে স্পষ্ট হয় যে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য ভারত প্রস্তুত, এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে চায়।
গত ৫ আগস্ট গণ আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে তার টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ চালাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি শপথ নেওয়ার পরপরই অভিনন্দন জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এছাড়া বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দুজনের ফোনালাপ হয়। ফোনালাপে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘুর পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দেন।
ওই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের কাছ থেকে ফোন পেয়েছি। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে।
পোস্টে তিনি আরও লেখেন, একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ এবং অগ্রগামী বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থনের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছি। তিনি আমাকে বাংলাদেশে হিন্দুসহ সমস্ত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়েছেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে ছোট বোন শেখ রেহানাসহ তারা ভারতেই অবস্থান করছেন।







