পরিস্থিতি বেশ জটিল এবং রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল। বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকে শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান এবং তার পাসপোর্ট প্রত্যাহারের বিষয়টি অনেক প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
এই পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য তিনটি সম্ভাব্য অপশন হতে পারে:
- অস্থায়ী আশ্রয় প্রদান: ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যা এক ধরনের রাজনৈতিক আশ্রয় হিসাবে বিবেচিত হবে। এ ধরনের পরিস্থিতি অতীতে অন্যান্য দেশের নেতাদের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে।
- বাংলাদেশ সরকারের সাথে কূটনৈতিক আলোচনা: ভারত এই পরিস্থিতি সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের সাথে সরাসরি কূটনৈতিক আলোচনা করতে পারে। এর মাধ্যমে একটি সম্মতিপূর্ণ সমাধানের পথে এগোনো সম্ভব হবে, যা দুই দেশের সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
- তৃতীয় দেশে পুনর্বাসন: শেখ হাসিনাকে তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার অপশনও বিবেচনা করা হতে পারে। এটি কূটনৈতিকভাবে কম জটিল হতে পারে এবং এতে ভারতের সরাসরি সম্পৃক্ততা কমে যাবে।
এমন পরিস্থিতিতে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভারতের পক্ষে কূটনৈতিক সম্পর্ক, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে সমন্বয় ও আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে ভারতের কাছে অপশন হিসেবে প্রথমটাই যে ‘সেরা’- তা নিয়েও অবশ্য কূটনৈতিক বা থিঙ্কট্যাঙ্ক মহলে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ তিনি ভারতেই রয়ে গেলে সেটা আগামী দিনে দিল্লি-ঢাকা সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে তারা মনে করছেন। এর পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য ঢাকার কাছ থেকে যদি কোনো অনুরোধ আসে, সেটা যেকোনো না কোনো যুক্তিতে দিল্লি খারিজ করে দেবে তাও একরকম নিশ্চিত। কাজেই শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য বাংলাদেশের হাতে তুলে দেয়াটাকে ভারতের জন্য কোনো বাস্তবসম্মত ‘অপশন’ বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন না। সুতরাং অন্যভাবে বললে, শেখ হাসিনাকে নিয়ে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদে ভারতের সামনে ওপরে উল্লিখিত তিনটে রাস্তাই খোলা থাকছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা