পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে দেশের ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, কক্সবাজার, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি ওঠায়, বৈদ্যুতিক মিটার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ও খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (আরইবি) ও বন্যাকবলিত এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর কর্মকর্তারা জানান, বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় আজ শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১১ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে ফেনীতে পুরোপুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে আরো এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়তে পারে। এখন পর্যন্ত আরইবির আর্থিক ক্ষতি হয়েছে সাত কোটি ৯৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন:  সায়মা ওয়াজেদের জন্মদিন পালিত, মেয়ের জন্য দোয়া চাইলেন মা শেখ হাসিনা

ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (ওঅ্যান্ডএম) আকাশ কুসুম বড়ুয়া  বলেন, ‘ফেনীতে ভয়াবহ বন্যার কারণে আমাদের ১৩টি সাব-স্টেশনের সব কটি বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে চার লাখ ৪১ হাজার ৫৪৬ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছে।

জানতে চাইলে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জিএম মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের এই সমিতিতে প্রায় আড়াই লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এখন আমাদের অফিসের ভেতরেও কোমর সমান পানি রয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই সবকটি লাইন চালু করা হবে।’

লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আমাদের বিতরণ এলাকায় কিছু সঞ্চালন লাইন ও খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ৪০ হাজারের মতো গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে।’

জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. মকবুল হোসেন বলেন, ‘মিটারে পানি ওঠায় এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ১৫ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।’

আরও পড়ুন:  বরখাস্ত-অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাবেক সেনাসদস্যদের বিক্ষোভ ও সেনাবাহিনীর অবস্থান

মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার এ বি এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘কিছু এলাকায় বন্যার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় ৪২ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। বন্যা পরিস্থিতির কারণে এই বিতরণ কম্পানিরও অনেক গ্রাহক বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে।’

বিপিডিবির সদস্য (বিতরণ) মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘বন্যার কারণে বিপিডিবির কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার একটি উপকেন্দ্রে পানি উঠেছে।

সেখানে ট্রান্সমিটার পানি স্পর্শ করেছে। ঝুঁকি এড়াতে ওই উপকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বিপিডিবির আওতাধীন এখন পর্যন্ত অন্যান্য উপকেন্দ্রগুলো সুরক্ষিত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে একটি বন্ধ থাকলেও অন্যটির সঙ্গে ফিডার সংযুক্ত করে দিলে ফের বিদ্যুৎ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *