উন্মুক্ত সন্দ্বীপ-চট্টগ্রাম নৌ রুট, কমছে নৌযানের ভাড়া

ওমর ফয়সাল, সন্দ্বীপ

চট্টগ্রামের মূল ভাগ থেকে বিছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ। চট্টগ্রাম থেকে সন্দ্বীপে আসা যাওয়ার একমাত্র পথ হল নৌপথ। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ অবৈধভাবে এ নৌ রুটে গলা কাটা ভাড়া আদায় করে আসছিল।

ফিটনেসবিহীন নৌযানে করে পারাপার করা হত যাত্রী। ফলে বিভিন্ন সময় নৌ দুর্ঘটনায় সন্দ্বীপ-চট্টগ্রাম নৌপথে অর্ধ-শতাধিক যাত্রীর সলিলসমাধি ঘটে।

এদিকে দীর্ঘদিন নৌপথের বিভিন্ন অনিয়মসহ নৌযানে ভাড়া কমানো ও উন্মুক্ত নৌরুটের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে সন্দ্বীপের সাধারণ মানুষসহ ছাত্র-শিক্ষক সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। সর্বশেষ ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর বৈষম্যবিরোধী যাত্রী আন্দোলনের ব্যানারে দ্রুত ফেরি সার্ভিস চালু, উন্মুক্ত নৌরুট, নৌযানের ভাড়া কমানোসহ ৭ আগস্ট থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে আন্দোলনকারীরা।

আরও পড়ুন:  সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ২৮ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা

তারই প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কুমিরা নৌ রুটে যাত্রীবাহী নৌযানে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধকরন ও বিধি বাস্তবতার আলোকে ভাড়া নির্ধারন এবং ফেরি সার্ভিস চালুর জন্য সাইট নির্ধারনে বাংলাদেশ নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের (বিআইডব্লিউটিএ) আট সদস্যের একটি সমন্বয় টিম চট্টগ্রাম কুমিরা ফেরিঘাটে সর্বস্তরের সন্দ্বীপবাসী ও স্থানীয় স্টেক হোল্ডারগনের সাথে মতবিনিময় করেন।

এসময় যাত্রীরা নৌপথে তাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দুর্দশার কথা বলার পাশাপাশি ঘাটকে যাত্রীবান্ধব করার জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবও তুলে ধরেন।

যাত্রীদের দাবির প্রেক্ষিতে সন্দ্বীপ-চট্টগ্রাম নৌরুটে স্পিডবোটের ভাড়া ২৫০ টাকা, সার্ভিস ও মালের বোটে যাত্রী ভাড়া ১২০ টাকা, স্টিমারের ভাড়া ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া সন্দ্বীপের ঘাটগুলোকে বিআইডব্লিউটিএর অধিনে উন্মুক্ত ঘোষণা করা হয়। তবে কেউ এসব ঘাট দিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বৈধ নৌযান দিয়ে যাত্রী পারাপার করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়।

আরও পড়ুন:  আগরতলায় বাংলাদেশের কনস্যুলার সার্ভিস বন্ধ

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএর(এস্টেট ও আইন) অতিরিক্ত পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দীন, নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব ছন্দা পাল, বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক মুহাম্মদ মোবারক হোসেন ও সবুর খান, বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের নির্বাহি প্রকৌশলী রেজাউল রশিদ খন্দকার, বিআইডব্লিউটিএর হাইড্রোগাফি বিভাগের সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ শরফুদ্দিন, বিআইডব্লিউটিএ (বন্দর ও পরিবহন) চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান, উপপরিচালক নয়নশীল এবং বিআইডব্লিউটিসির মহাব্যবস্থাপক বাণিজ্য(চট্টগ্রাম) গোপাল চন্দ্র মজুমদার।

সন্দ্বীপের মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট দাবিগুলো তুলে ধরেন নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্য সচিব আমিনুর রসুল বাবুল, সিনিয়র সাংবাদিক সালেহ নোমান, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, এস এম যাহিদুল আলম সুমন, মনিরুল হুদা বাবন, নুরুল মোস্তফা খোকন, সাংবাদিক ওমর ফয়সাল, অধ্যক্ষ মোক্তাদের আজাদ খান, প্রফেসর শোয়ায়েব উদ্দিন হায়দার, লায়ন আমজাদ হোসেন, ফোরকান উদ্দিন রিজবি, মো: আবু তাহের, আজমত আলী বাহাদুর, খাদেমুল ইসলাম, শেখ রুবেল, মিলাদ আব্বাস, সানাউল্লাহ সন্দ্বীপী, ইকবাল মালেক, মাসুদুর রহমান। ছাত্রদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নজরুল মাহমুদ, আশিক বিল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম, অহিদুর রহমান সাকিব, আজমল অপূর্ব, নাজিম উদ্দিন সাগর, আকাইদ ইসলাম জিহাদ, মোহাম্মদ রাকিব উল্লাহ, মোহাম্মদ জাবের, মোহাম্মদ হামিদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *