সচিবদের ৭ দিন সময় দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

সার, বিদ্যুৎ, কৃষি, জ্বালানি, বন্দর, রেল, খাদ্যসহ জরুরি বিষয়ে অগ্রাধিকারের নির্দেশ । দ্রুত ফাংশনাল করতে হবে মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরগুলোকে । সচিব পর্যায়ের নথি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে.

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় তার অধীন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রধানদের সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে ২৫টি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিববৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরগুলোকে দ্রুত ফাংশনাল করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ জন্য সাত দিন সময় দিয়ে এখন থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে সার, বিদ্যুৎ, কৃষি, জ্বালানি, বন্দর, খাদ্যসহ জরুরি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে সাত দিনের মধ্যে তালিকা করে কাজ শুরু করতে হবে এবং তালিকাগুলো প্রধান উপদেষ্টাকে দিতে হবে।

জনপ্রশাসন সচিব বলেন, যেসব মন্ত্রণালয়ে এত দিন মন্ত্রী ছিলেন না, সেসব মন্ত্রণালয়ের কাজ যাতে স্থবির হয়ে না যায়, সচিবরা সেসব কাজ নিজ উদ্যোগে যাতে শুরু করেন, তা নিয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। মন্ত্রণালয় পর্যায়ে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ রয়েছে, সচিব সেগুলোর সিদ্ধান্ত নেবেন। একই সঙ্গে যেসব নথি মন্ত্রী পর্যায়ে যেত, সেগুলো দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টার কাছে কম সময়ের মধ্যে উপস্থাপন করতে হবে।

আরও পড়ুন:  ভারতে পদদলিত হয়ে প্রাণহানি বেড়ে ১২১

বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন সচিব আমাদের সময়কে বলেন, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) তারুণ্যের শক্তির ওপর আলোকপাত করেছেন। তিনি বলেছেন- তারুণ্যের শক্তির মাধ্যমে যে পরিবর্তন আসছে, এর মাধ্যমে একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা যেন এ সুযোগ কাজে লাগাই। দপ্তরগুলোয় কোথায় কী ধরনের রিফর্ম (সংস্কার) প্রয়োজন শুরু করতে হবে। সব মন্ত্রণালয়, বিভাগে যেভাবে আমরা কাজ করছিলাম তারচেয়েও ভালোভাবে কাজ করতে হবে। যেন আমরা প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে পারি। এ বিষয়ে তিনি সরাসরি নির্দেশনা দিয়েছেন।

প্রশাসনে রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আছে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে। সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। যদিও কিছু বিতর্কিত চুক্তি অবিলম্বে বাতিল করা হবে, বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হবে। গত কয়েক বছর যারা পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের দাবিগুলো শুনে শিগগির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন:  প্রকাশ্যে এল অনন্ত-রাধিকার বিয়ের কার্ড

জানা যায়, বৈঠকে সচিববৃন্দ পরিচয় দিয়ে তাদের মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যক্রম অবহিত করেন।

প্রধান উপদেষ্টার অধীন ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ হলো- মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

১৫ আগস্টের ছুটি নিয়ে যা জানা গেল : শেখ হাসিনা সরকার ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছিল। তবে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। বর্ষপঞ্জি হিসেবে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের ছুটি। এই ছুটি বহাল থাকবে কি-না তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল সচিবালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

আরও পড়ুন:  ঈদের ছুটি একদিন বাড়ানোর সুপারিশ মন্ত্রিসভা কমিটির

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সচিবদের বৈঠকেও কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় এসে ২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে। ৬ বছর পর হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পুনর্বহাল করে।

 

…….ডিডিজে নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *