ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করলেন শেখ হাসিনা

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই প্রথম নীরবতা ভাঙলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিদেশি শক্তিগুলোর হাত রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গতকাল শনিবার তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়েছেন। এই বার্তায় তিনি এমন অভিযোগ করেন। বার্তাটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট দেখতে পেয়েছে। তবে প্রথম আলো এই বার্তাটি আলাদা করে যাচাই করতে পারেনি।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকটের পেছনে ‘বিদেশি শক্তির হাত’ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়ার কয়েক দিনের মাথায় এমন কথা বললেন শেখ হাসিনা।

বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যদি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সেন্ট মার্টিন ও বঙ্গোপসাগর ছেড়ে দিতাম, তাহলে ক্ষমতায় থাকতে পারতাম।’

আরও পড়ুন:  চট্টগ্রামে ছেলের বিয়ে থেকে গ্রেপ্তার আ.লীগ নেতা ফখরুল কারাগারে

অনেক দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকারের টানাপোড়েন চলছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তিনি এক ‘শ্বেতাঙ্গ’ ব্যক্তির কাছ থেকে একটি প্রস্তাব পেয়েছেন। তাঁকে বলা হয়, বিমানঘাঁটি করতে দিলে তিনি সহজে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারত যান শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার।

শেখ হাসিনা এ ধরনের বিদেশি শক্তির দ্বারা ‘ব্যবহৃত’ না হওয়ার জন্য নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করেছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, লাশের মিছিল যাতে দেখতে না হয়, সে জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন। তারা শিক্ষার্থীদের লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। তিনি তা হতে দেননি।

আরও পড়ুন:  যেখানেই পারেন অন্তত তিনটি গাছ লাগান: প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা আরও বলেন, তিনি দেশে থাকলে হয়তো আরও প্রাণহানি হতো। আরও অনেক সম্পদহানি হতো।

ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা আগামী সপ্তাহে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।

শেখ হাসিনা তাঁর বার্তায় দেশে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি শিগগিরই ফিরব, ইনশা আল্লাহ। পরাজয় আমার, কিন্তু জয়ী হয়েছে বাংলাদেশের জনগণ। আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। আপনাদের সমর্থন নিয়ে আমি এসেছিলাম, আপনারা ছিলেন আমার শক্তি। আপনারা যখন আমাকে চাননি, তখন আমি নিজে থেকে সরে গেছি, পদত্যাগ করেছি। আমার যেসব কর্মী সেখানে (দেশে) আছেন, তাঁরা কেউ মনোবল হারাবেন না। আওয়ামী লীগ বারবারই উঠে দাঁড়িয়েছে।’

সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, তাঁর বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, তিনি তরুণ শিক্ষার্থীদের আবার বলতে চান, তিনি কখনোই তাঁদের রাজাকার বলেননি। তাঁর কথাগুলো বিকৃত করা হয়েছে। একটি গোষ্ঠী ফায়দা নিয়েছে।

আরও পড়ুন:  দেশের স্বার্থে কোনো অপশক্তিকে সহ্য করা হবে না: ওবায়দুল কাদের

প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার নামে এরকম একটি বার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া যাচ্ছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *