টিয়ার শেল থেকে বাঁচতে করণীয়

টিয়ার শেল বা কাঁদানে গ্যাস সম্পর্কে কমবেশি সবারই ধারণা আছে। টিয়ার গ্যাস রাসায়নিক অস্ত্র তবে প্রাণঘাতী নয়। স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে টিয়ার গ্যাস-বিষয়ক একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই গ্যাসের প্রভাবে মৃত্যু না হলেও তাৎক্ষণিকভাবে নানারকম ক্ষতি করতে পারে। যেমন, ত্বকে ও মুখে জ্বালাপোড়া করা, শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা এবং গ্যাসের কারণে দেখতে সমস্যা হওয়া।

মিডিয়া রিসোর্সেস ডেভলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই)- এর ‘সাংবাদিকতায় নিরাপত্তা ও সুরক্ষা’ নামের একটি ম্যানুয়াল আছে। সেখানে বলা হয়েছে, সাধারণত পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই ধরনের কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। একটি স্প্রে এবং অপরটি বিশেষ ধরনের বন্দুকের মাধ্যমে ছোড়া গ্রেনেড ক্যানিস্টার। সাংবাদিকদের এ ধরনের অ্যাসাইনমেন্টের ক্ষেত্রে যেসব বিষয় মাথায় রাখবেন, ম্যানুয়াল থেকে তুলে ধরা হল:

নিরাপত্তায় যা করবেন

  • শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য কাঁদানে গ্যাস ঝুঁকিপূর্ণ; সুতরাং আক্রান্ত এলাকা থেকে দূরে থাকুন।
  • গ্যাস মাস্ক এবং চোখের প্রটেক্টিং গগলস (চশমা) সঙ্গে রাখুন এবং যখনই দরকার হয় পরে ফেলতে হবে। নির্মাণকাজে ব্যবহার করা
  • মাস্ক বা ধুলাবালি প্রতিরোধী মাস্কও কিছুটা সুরক্ষা দেবে।
  • কাপড় দিয়ে মুখ, নাক ও চোখ বেঁধে কিছুটা সুরক্ষা সম্ভব, তবে ভেজা কাপড় নয়।
  • কাঁদানে গ্যাস বাতাসের চেয়ে ভারী বলে সহজে ওপরে ওঠে না, তাই আক্রান্ত হলে দ্রুত উঁচু জায়গায় অবস্থান নিন।
  • ঘটনাস্থলে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহৃত হলে বাতাসের উলটো দিকে থাকতে হবে।
  • কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়া কাপড়ে লেগে থাকে। তাই বাড়তি পোশাক সঙ্গে রাখতে হবে এবং আক্রান্ত হলে পোশাক বদলে নিতে হবে।
  • তৈলাক্ত ক্রিম, লোশন বা মেকআপ নিয়ে স্পটে যাওয়া যাবে না, এসব কাঁদানে গ্যাসে থাকা ক্রিস্টালকে ত্বকের সঙ্গে আটকে রাখে, ফলে জ্বালাপোড়া বাড়ে।
  • চোখ বা শরীরের আক্রান্ত অংশ ঘষা-ঘষি করা যাবে না, যত দ্রুত সম্ভব ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • কাঁদানে গ্যাস কাপড়ে দীর্ঘদিন লেগে থাকে তাই ভালোভাবে না ধুয়ে নিলে পরেও গ্যাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • কাঁদানে গ্যাসে আক্রান্ত হলে চোখের কন্টাক্ট লেন্স দ্রুত খুলে ফেলতে হবে।
  • এলাকার পরিচিত ল্যান্ডমার্ক চিনে রাখা জরুরি, যেন গ্যাসের কারণে দেখতে সমস্যা হলেও পথ চেনা যায়।
আরও পড়ুন:  বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলার কারা পেয়েছে? যা বললেন ট্রাম্প

কাঁদানে গ্যাসের স্বাস্থ্য ঝুঁকি
কাঁদানে গ্যাসের বিষক্রিয়ায় শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, শরীর জ্বালা- পোড়াসহ চোখ ও ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। ক্যানিস্টার বা টিয়ারশেলও মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। উত্তপ্ত শেল সরাসরি আঘাত করলে দগ্ধ ও আহত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

কাঁদানে গ্যাস সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা 
টিয়ার গ্যাসে আক্রান্ত হলে দ্রুত উপশমের বেশকিছু পদ্ধতি প্রচলিত আছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এগুলো ভুল ধারণা এবং এর কোনোটাই বিজ্ঞানসম্মত নয়। এতে বরং শারীরিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চোখে সরাসরি বা চোখের সামনে কাপড়ে ভিজিয়ে পানি, ভিনেগার, লেবু বা লেবু জাতীয় ফলের রস, টুথপেস্ট, কয়লা বা আগুন এমনকি  পেঁয়াজ কেটে ধরার মতো প্রাথমিক চিকিৎসার কথা কেউ কেউ বলেন। তবে এগুলোর কোনোটাই ভালো উপায় নয়। তাই এগুলো এড়িয়ে চলা শ্রেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *