বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিঙ্কেনকে চিঠি লিখেছেন মার্কিন কংগ্রেসের ২২ জন সিনেটর ও প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য। এই সদস্যরা ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী রিপাবলিকান উভয় দলের প্রতিনিধি।

শুক্রবার (২ আগস্ট) লেখা ওই চিঠিতে তারা উল্লেখ করেছেন, গত কয়েক সপ্তাহে সারা বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের ভয়াবহ সংঘর্ষে লিপ্ত হতে দেখা গেছে। এতে বর্তমান সরকারের অধীনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। এই চিঠির উদ্যোক্তা সিনেটর এডওয়ার্ড জে. মারকি (ডেমোক্রেট- ম্যাসাচুসেটস), প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য জিম ম্যাকগভার্ন (ডেমোক্রেট- ম্যাসাচুসেটস) এবং বিল কেটিং (ডেমোক্রেট- ম্যাসাচুসেটস)।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারী অন্যরা হলেন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন (ডেমোক্রেট), ডিক ডারবান  (ডেমোক্রেট), টিম কেইন (ডেমোক্রেট), টামি বল্ডউইন (ডেমোক্রেট), জেফ মারকি (ডেমোক্রেট) এবং ক্রিস মারফি। এছাড়া প্রতিনিধি পরিষদের স্বাক্ষরকারীরা হলেন শেঠ মুলটন, লোরি ট্রাহান, জো উইলসন, দিনা তিতাস, গ্রেস মেং, গেরি কনোলি, গাবি আমো, আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ, ইলহান ওমর, নিদিয়া ভেলাজকুয়ে, ড্যান কিলডি, বারবারা লি এবং ডেলিগেট জেমস মোইলান।

আরও পড়ুন:  ‘সাহস থাকলে পাকিস্তানে আসো এবং খেলো’

AC Edited

চিঠিতে তারা লিখেছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে খর্ব করে এমন পদক্ষেপ অব্যাহতভাবে নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এর মধ্যে আছে জানুয়ারিতে ভয়াবহ ত্রুটিপূর্ণ এক নির্বাচন। শ্রমিকদের বিষয়ে বিধান উন্নত করতে ব্যর্থতা। আর সম্প্রতি গুলি, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রায় পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ভয়াবহভাবে দমনপীড়ন চালাচ্ছে।  এই চিঠিতে জোর দিয়ে বলা হয়, এসব উদ্বেগজনক পরিস্থিতি এবং অব্যাহতভাবে যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তাতে আমরা  আশা  করি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের যে জোরালো সম্পর্ক আছে তার প্রেক্ষিতে গণতান্ত্রিক রীতিনীতিকে সমুন্নত করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে উদ্যোগ নেবেন আপনি।

এ ছাড়া সবরকম সহিংসতার অবশ্যই নিন্দা জানাতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। নিশ্চিত করতে হবে নাগরিক গুরুত্বপূর্ণ স্বাধীনতাকে। এর মধ্যে আছে মত প্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার সুরক্ষিত রাখা। বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে ওপরে বর্ণিত নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জবাবদিহিতার ব্যবস্থা নিতে হবে। উপরন্তু গণতান্ত্রিক আরও অবনতি রোধ করার জন্য বাংলাদেশে একটি প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক সরকারের বিষয়ে বাংলাদেশি জনগণের অধিকারকে সমর্থন করতে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে হবে। যে সরকার জনগণের মানবাধিকার ও স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখবে।

আরও পড়ুন:  আমিরাতে বিক্ষোভ করা সেই ৫৭ বাংলাদেশি ক্ষমা পেলেন

উল্লেখ্য, সিনেটর মারকি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষিত রাখার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। এর মধ্যে রয়েছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি বন্ধে এ বছর জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি ও তার সহকর্মীরা চিঠি লিখেছেন। একই সঙ্গে ব্যাপকভাবে সরকারের সমালোচকদের টার্গেট করতে বিচারবিভাগকে ব্যবহার করে নিয়ম লঙ্ঘন বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সিনেটর মারকি ও তার সহকর্মীরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার। একই সঙ্গে তাদেরকে ভাসানচরে পুনর্বাচন স্থগিত করার আহ্বান জানান, যতক্ষণ ওই স্থানকে জাতিসংঘ নিরাপদ ও বসবাসের উপযোগী বলে নিশ্চয়তা না দেয়।

 

…….ডিডিজে নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *