খ্রিস্টানরা বেরিয়ে আসুন, এবারের মতো ভোট দিন: ট্রাম্প

রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, এই নভেম্বরে তাকে ভোট দিলে চার বছরের মধ্যে তাদের আর ভোট দিতে হবে না।

ফ্লোরিডার একটি অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, খ্রিস্টানরা, বেরিয়ে আসুন এবং এবারের মতো ভোট দিন। আপনাদের আর এটা করতে হবে না। অবশ্য এর মাধ্যমে তিনি ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক।

নির্বাচনী প্রচারে এমন এক সময়ে তিনি এই বক্তব্য দিলেন, যখন ডেমোক্র্যাটিক দল তাদের প্রচারে ট্রাম্পকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে অভিযুক্ত করে আসছে। তার এই বক্তব্যের পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে ২০২০ সালের পরাজয়কে উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবনে হামলার প্রসঙ্গটিও আবার আলোচনায় আসছে।

ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে টার্নিং পয়েন্ট অ্যাকশন নামের একটি রক্ষণশীল গ্রুপের আয়োজন করা একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন ট্রাম্প। সেখানে ট্রাম্প বলেন, খ্রিস্টানরা, বেরিয়ে আসুন এবং এবারের মতো ভোট দিন। আপনাদের আর এটা করতে হবে না। আরও চার বছর, আপনি জানেন সব ঠিক করা হবে, এটা ঠিক হবে, আপনাকে আর ভোট দিতে হবে না, আমার সুন্দর খ্রিস্টানরা।

আরও পড়ুন:  বস্তুত, মেধাবীদের কোটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই

তিনি আরও বলেছেন, আমি আপনাদের খ্রিস্টানদের ভালোবাসি। আমি একজন খ্রিস্টান। আমি আপনাদের ভালোবাসি। আপনাদের বের হতে হবে এবং ভোট দিতে হবে। চার বছরের মধ্যে আপনাদের আর ভোট দিতে হবে না, আমরা এটা ঠিক করে ফেলবো। আপনাকে আর ভোট দিতে হবে না।

‘আর ভোট দিতে হবে না’ বলতে ট্রাম্প আসলে কী বুঝিয়েছেন, সেটা জানতে চার প্রচারাভিযানের মুখপাত্র স্টিভেন চেউংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তবে তিনি ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি। চেউং বলেন, ট্রাম্প ‘এই দেশকে একত্রিত করার কথা বলছিলেন’ এবং দুই সপ্তাহ আগে তাকে হত্যার চেষ্টার জন্য ‘বিভক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ’কে দায়ী করেছেন।
২০ বছর বয়সি বন্দুকধারী ট্রাম্পের উপর কেন গুলি চালিয়েছিলেন তার কারণ এখনও তদন্তকারীরা বের করতে পারেননি।

আরও পড়ুন:  জাতিসংঘের প্রতিবেদন : বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মারা গেছেন ৬৫০ জন

গত ডিসেম্বরে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি একজন স্বৈরশাসক হবেন। তবে সেটা শুধু ‘প্রথম দিন’, মেক্সিকোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত বন্ধ করতে এবং তেল খনন সম্প্রসারণ করতে।

ডেমোক্র্যাটরা এই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনায় মুখর হওয়ার পর ট্রাম্প অবশ্য ফক্স নিউজে দেওয়া মন্তব্যটিকে ‘রসিকতা’ বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন।

দ্বিতীয় মেয়াদে জয়ী হলে ট্রাম্প চার বছর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। মার্কিন সংবিধান প্রেসিডেন্টের মেয়াদ দুই মেয়াদে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে। সংবিধানের এই বিধিনিষেধ নিয়েও ট্রাম্প ব্যঙ্গ করেছেন।

মে মাসে ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের এক সমাবেশে তিনি ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের কথা উল্লেখ করেন। রুজভেল্টই একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি দুই মেয়াদের বেশি দায়িত্ব পালন করেছেন। রুজভেল্টের প্রেসিডেন্সির পর প্রেসিডেন্টের দুই মেয়াদের সীমা যোগ করা হয়।

ট্রাম্প সমাবেশে উপস্থিত অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা জানেন, এফডিআর, ১৬ বছর- প্রায় ১৬ বছর- চার মেয়াদে ক্ষমতায় ছিলেন। আমি জানি না, আমাদের কি তিন-মেয়াদ বিবেচনা করা হবে? নাকি দুই-মেয়াদ?

আরও পড়ুন:  আমরা শুধু জিতব, জিতব এবং জিতব : ট্রাম্প

বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর এবং তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে যাওয়ার পর আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে জমজমাট প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

সাম্প্রতিক জনমত জরিপগুলোতে দেখা হেছে, কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে প্রচারণা শুরুর পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ডেমোক্র্যাটদের ব্যবধান দ্রুতই কমে প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে। হ্যারিসের প্রচার দলের মুখপাত্র জেসন সিঙ্গার এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘উদ্ভট’ এবং ‘পশ্চাদমুখী’ বলে বর্ণনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *