প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তাদের এই অবদানকে শ্রদ্ধা জানানো আমাদের কর্তব্য। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান স্মরণ করে বলেন, “জাতির পিতার ডাকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন। পরিবার, পরিজন, বাবা-মা সবার মায়া ত্যাগ করে শত্রুকে পরাজিত করে বিজয় নিশ্চিত করেছেন তারা। একটা সময় তারা অবহেলিত ছিলেন। তাদের অনেকে আমাদের দল করতে নাও পারেন, কিন্তু তাদের প্রতি যুগ যুগ ধরে এ দেশের মানুষ সম্মান জানাবে-সেটাই আমরা চাই।”
তিনি আরো বলেন, “যে চেতনা নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর অনেক দূরে চলে যায়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেন জিয়া। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করে, মন্ত্রী-উপদেষ্টার মর্যাদা দেন তিনি। ক্ষমতা পায় যুদ্ধাপরাধীরা।” প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি জাতির শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতিফলন এবং স্বাধীনতার মূল চেতনা রক্ষা করার অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার কাজ করছে যেন কোনো অঞ্চলের মানুষ পিছিয়ে না পড়ে। তিনি বলেন, “বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে আমরা চলব। জনগণ যেন সেবাটা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কেউ এ দেশে পিছিয়ে থাকবে না। সেদিকে আমরা নজর দিচ্ছি। তাদের প্রতি আমরা সহানুভূতিশীল।”
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “আমরা ক্ষমতায় এসে দেখলাম গবেষণায় কোনো বরাদ্দ নেই। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি গবেষণায় গুরুত্ব দিই। বিজ্ঞান ও গবেষণা ছাড়া কোনো দেশ উন্নতি করতে পারে না। গবেষণা একান্তভাবে দরকার। এসব করতে গিয়ে মামলাও খেতে হয়েছে আমাকে। নভোথিয়েটার করায় দুটি মামলা হয় আমার বিরুদ্ধে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসেই ফেলোশিপ বন্ধ করে দেয়। তাতে কত মানুষ যে বিপদে পড়ে! ২০০৮ সালে সরকার গঠনের পরই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় বাড়ানো ও শিক্ষার মান উন্নয়নের পদক্ষেপ নিই। ফেলোশিপকে একটি আইন করে ট্রাস্টের অধীনে দেব, যাতে কেউ আর বন্ধ করতে না পারে।”
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয় যে, তার সরকার গবেষণা ও শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ এবং সহায়তার মাধ্যমে দেশের উন্নতি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি দেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান সুযোগ ও সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ট্রাস্ট ফান্ডের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা লাগবে এবং এই অর্থ যোগাড় করাও সম্ভব হবে। তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা তো চাঁদেও যাব, সেভাবে লোক তৈরি করতে হবে। যে অর্থ ব্যয় করছি, সেটা উপযুক্ত নাগরিক তৈরির জন্য। কোনো অঞ্চলের মানুষ যেন পিছিয়ে না পড়ে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আমরা ২য় স্যাটেলাইটের নির্মাণকাজ শুরু করতে পারব। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী নাগরিক গড়ে তুলতে চাই। আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা অনেক মেধাবী। শুধু তাদের সুযোগ করে দিতে হবে।”
সরকারপ্রধান আরও বলেন, “বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে আমরা চলব। জনগণ যেন সেবাটা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কেউ এ দেশে পিছিয়ে থাকবে না, সেদিকে আমরা নজর দিচ্ছি। তাদের প্রতি আমরা সহানুভূতিশীল। আর যারা মুক্তিযোদ্ধা, তাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে এ দেশে স্বাধীন হয়েছে, তাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে। তারা একটা সময় অবহেলিত ছিলেন। তাদের অনেকে আমাদের দল করতে নাও পারেন, কিন্তু তাদের প্রতি যুগ যুগ ধরে এ দেশের মানুষ সম্মান দেবে, সেটাই আমরা চাই।”
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, তার সরকারের লক্ষ্য হলো শিক্ষা, গবেষণা, প্রযুক্তি এবং নাগরিক সেবায় উন্নয়ন ঘটানো এবং প্রতিটি অঞ্চলের মানুষকে সমান সুযোগ ও সেবা প্রদান করা। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো এবং তাদের অবদানের মূল্যায়ন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।