দিনভর ব্যাপক সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীদের নাশকতা থেকে বিরত থাকতে বলল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন। সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে প্রভোস্ট কমিটির জরুরি সভা শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মাহমুদ আলমের সই করা এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেউ নাশকতামূলক কাজে জড়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য ৫টি সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এতে বলা হয়-
- -শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব হলে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবেন।
- -প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে সার্বক্ষণিকভাবে হলে অবস্থান করবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
- -হলসমূহে কোনো বহিরাগত অবস্থান করতে পারবেন না, যেকোনো ধরনের গুজব ও অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানানো হচ্ছে ।
- -এবং সকলকে নাশকতামূলক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বলা যাচ্ছে।
- -এছাড়া সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এর আগে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সোমবার বিকেলের পর দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুপক্ষ। এতে অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা নবম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করা করে। ফলে সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ নারী কোটা, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ১০ শতাংশ জেলা কোটা বাতিল হয়ে যায়।
পরে ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করে। ওই রিটের শুনানি শেষে গত ৫ জুন সরকারের জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এতে সরকারি চাকরিতে আবারও কোটা ফিরে আসে।
বিষয়টি আপিলে গেলে গত ৯ জুন হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে বিষয়টি আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম। ৪ জুলাই আপিল বেঞ্চ জানায়, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মামলাটির শুনানি শুরু হবে। গত ১১ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থগিতাদেশ দেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, ঝুলন্ত কোনো সিদ্ধান্ত তাঁরা মানবেন না।