‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে না’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান তাঁর সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করবে বলে তিনি মনে করেন না। এমনকি দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূলে তাঁর ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণের প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘যারা অপরাধ করছে বা দুর্নীতিতে জড়াচ্ছে সে আপন কিংবা পর বিবেচনা না করে তাদের ধরতে হবে সেটা মনে করি না। তাদের ছাড়ব না। এক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে না।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকেলে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে গত ৮ থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত তাঁর চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন।

তিনি বলেন, আমি কঠোর হয়েছি বলেই কিন্তু ধরা পড়েছে, এটা মাথায় রাখতে হবে। এর আগে কখনও কেউ এভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান করেনি। আমি তো বলেছি আমার ‘জিরো টলারেন্স’। এর আগে জঙ্গিবাদ নির্মূল করার কথা ছিল সেটাও আমরা করেছি। কারণ এটা তো চট করে হবে না, দীর্ঘদিনের সমস্যা। এই সমস্ত জঞ্জাল দূর করতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন:  পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই জঙ্গিবাদ যখন আমরা নিয়ন্ত্রন করতে পারলাম আর দুর্নীতি নিয়ে যেহেতু আমার ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করাই আছে সেটা আমি করছি।

তিনি বলেন, আমরা খুঁজে বের করছি বলেই কিন্তু সকলে জানতে পারছে। খোঁজ না করলে কিন্তু জানা যেত না। এইভাবেই চলতে থাকতো। কারণ এইভাবেই চলছিল। ’৭৫-এর পর থেকেই এভাবে চলছে। এখন আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কাজেই এই ব্যবস্থা নেওয়াটা অব্যাহত থাকবে। এটা নিয়ে তো আর কোন দ্বিধা নেই। আমি এটা বিশ^াস করি না যে আমি দুর্নীতিবাজদের ধরলেই আমার সরকারের ইমেজ নষ্ট হবে।

তিনি বলেন, ‘আমি এটা বিশ^াস করি না। আমার দায়িত্বই হচ্ছে এই যে অনিয়মগুলো হচ্ছে সেগুলো ধরে দেশটাকে একটা সুস্থ জায়গায় নিয়ে আসা। সেটাই আমরা করার পদক্ষেপ নিয়েছি। কাজেই এটা অব্যাহত থাকবে।’

আরও পড়ুন:  আমরাও একদিন চাঁদে যাব : প্রধানমন্ত্রী

পিএসসির এক গাড়িচালক কিভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হলো? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাসার একজন পিয়ন ছিল, সেও নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক! হেলিকপ্টার ছাড়া নাকি চলে না। পরে তাকে ধরা হয়েছে। খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে। ড্রাইভার কীভাবে এত কোটি কোটি টাকার মালিক হলো, সেটা কীভাবে বলবো? তাদের অপকর্ম আমরা ধরছি বলেই তো এখন জানতে পারছেন। এতদিন তো আপনারা জানতে পারেননি।

চীন সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন হলেও দুর্নীতি, বিএসএস-এর প্রশ্নপত্র ফাঁস, কোটা আন্দোলন থেকে শিক্ষকদের আন্দোলন, তিস্তা প্রকল্প, সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলাসহ বিভিন্ন সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন:  ২৮৭টিতে আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছে জাতীয় পার্টি

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ড. আহসানুল ইসলাম টিটু, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন।

সূত্র: বাসস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *