কোপা আমেরিকা ও ইউরো উভয় টুর্নামেন্টেই এবার ফাইনালে উঠতে পারা দলগুলো শুধু গৌরবই নয়, অর্থের দিক থেকেও বড় প্রাপ্তির জন্য প্রস্তুত।
কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন দল এবারের আসরে সর্বশেষ আসরের তুলনায় প্রায় ৪ গুণ বেশি প্রাইজমানি পাবে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২১৮ কোটি টাকারও বেশি। অন্যদিকে রানার্স আপ দলটি এর অর্ধেকেরও কম প্রাইজমানি পাবে। ইউরোর ক্ষেত্রে, যদি স্পেন শিরোপা পুনোরুদ্ধার করে, তাহলে তারা সাড়ে তিনশো কোটির বেশি টাকা পাবে। তবে ইংল্যান্ড যদি জয়ী হয়, তবে টুর্নামেন্টের নিয়মের কারণে তাদের প্রাইজমানি কমে যাবে।
প্রায় মাসখানেক ধরে চলা এই ফুটবল উৎসবের পর এখন ফাইনালের প্রতীক্ষা। ফাইনালে জয়ী হওয়ার গৌরবের পাশাপাশি, চার ফাইনালিস্ট দলগুলোর মাথায় অর্থের হিসেবও গুরুত্বপূর্ণ থাকবে।
কনমেবল এবং কনকাকাফ যৌথভাবে এবারের কোপা আমেরিকার আয়োজন করেছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই আয়োজনে টুর্নামেন্টের জৌলুস বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাইজমানির পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হয়েছে। শুধু অংশগ্রহণ করলেই প্রতিটি দল পাবে ৩ মিলিয়ন ডলার। এরপর শীর্ষ চার দলের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে আরও ৬০ মিলিয়ন ডলার।
যদি সবকিছু মিলিয়ে হিসেব করা হয়, তাহলে এবারের কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন দলের কোষাগারে জমা হবে বাংলাদেশি মুদ্রায় ২১৮ কোটি টাকারও বেশি, যা গতবারের তুলনায় ৪ গুণ বেশি। ২০২১ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত কোপার সবশেষ আসরে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল এবং প্রাইজমানি হিসেবে পেয়েছিল ৫৫ কোটি টাকা। তবে এবারের রানার্স আপ দলটি গতবারের তুলনায় আড়াই গুণ বেশি প্রাইজমানি পাবে।
এতে বোঝা যাচ্ছে, এবারের কোপা আমেরিকার টুর্নামেন্টে শুধু গৌরবই নয়, অর্থের পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আর্জেন্টিনার সামনে এখন এক বিরাট সুযোগ আছে ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে টানা দুই কোপা আমেরিকা জেতার এবং সেই সঙ্গে বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেডারেশনের কোষাগারে জমা করার। উল্লেখ্য, পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো এই ফুটবল টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এত বিশাল অঙ্কের প্রাইজমানির নজির এবারই প্রথম দেখা যাচ্ছে।
অর্থের দিক থেকে বিবেচনা করলে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপও প্রাধান্য পাবে। আঞ্চলিক শ্রেষ্ঠত্বের কোনো আসরে এত বেশি টাকার ঝনঝনানি দেখা যায় না। গতবারের তুলনায় ইউরোর প্রাইজমানির পরিমাণ প্রায় একই রকম থাকলেও, সেই সংখ্যাটাও যে কারো মাথা ঘুরিয়ে দিতে পারে।
কোপা আমেরিকা ও ইউরো উভয় টুর্নামেন্টের ফাইনালিস্ট দলগুলোর জন্য শুধু গৌরবের লড়াই নয়, আর্থিক প্রাপ্তির লড়াইও বটে। এই প্রাইজমানি তাদের ফেডারেশনের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
ইউরোর প্রাইজমানি বণ্টনের হিসেবটা কিছুটা ভিন্ন। অংশগ্রহণ ফি থেকে শুরু করে ম্যাচপ্রতি জয়ের হিসেবে আলাদা করে টাকা ঢুকবে দলগুলোর একাউন্টে। রাউন্ড অব সিক্সটিন থেকে ফাইনাল পর্যন্ত প্রতিটি রাউন্ডে যত এগোবে কোনো দল, নামের পাশে যোগ হবে তত বেশি অর্থ।
তাই স্পেন ও ইংল্যান্ডের জন্য প্রাইজমানির পরিমাণও ভিন্ন। গ্রুপ রাউন্ডে সবগুলো ম্যাচ জেতায় লা রোহা (স্পেন) থ্রি লায়ন্সের (ইংল্যান্ড) তুলনায় ১ মিলিয়ন ইউরো বেশি পাবে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৬০ কোটি টাকার বেশি। অন্যদিকে, চ্যাম্পিয়ন হলেও গ্রুপ পর্বে দুই ম্যাচ ড্র করায় ইংল্যান্ড তুলনামূলকভাবে কম অর্থ পাবে।
এই কারণে দুই ফাইনালিস্ট দলের জন্য প্রাইজমানির পরিমাণে ভিন্নতা দেখা যাবে। তাই শুধু চ্যাম্পিয়ন হওয়াই নয়, প্রতিটি ম্যাচে জয়লাভ করাও দলগুলোর জন্য আর্থিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।