বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজারের মন্তব্য অনুযায়ী, ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যের খণ্ডিতকরণের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় উপযুক্ত জীবিকা নির্বাহের সুযোগ কমছে। এই অঞ্চলে গত দুই দশক ধরে শ্রমশক্তিতে প্রবেশকারীদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
এর ফলে, নতুন শ্রমশক্তিতে প্রবেশকারীদের তুলনায় প্রায় ৩০ কোটি চাকরির অভাব দেখা দিয়েছে। এটি একটি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি যা ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশীয়দের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে।
শুক্রবার প্রকাশিত ‘রিথিংকিং সোশ্যাল প্রটেকশন ইন সাউথ এশিয়া : টুওয়ার্ডস প্রগ্রেসিভ ইউনিভার্সালিজম’ শীর্ষক প্রবন্ধে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার এসব তথ্য তুলে ধরেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ এশিয়া নেতিবাচক ঝুঁকির অভূতপূর্ব সংমিশ্রণের সম্মুখীন হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, শ্রীলঙ্কায় করোনার প্রভাবে অর্থনৈতিক সংকটে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানে ২০২২ সালের বন্যা ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রায় ৯ দশমিক ১ মিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্যের দিকে যেতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী জ্বালানি ও খাদ্য সংকট আরও প্রসারিত হয়েছে, যার ফলে দক্ষিণ এশিয়ার কর্মজীবী মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মার্টিন রাইজারের মতে, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুত ক্রমবর্ধমান কর্মক্ষম জনসংখ্যার জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাচ্ছে। এমন সময়ে নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন হয়েছে যা বিশ্বকে অভূতপূর্বভাবে প্রভাবিত করেছে, ফলে কর্মক্ষম মানুষ আরও বিপাকে পড়ছে। তবুও, দক্ষিণ এশিয়া বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগের একটি অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এখানের তরুণ জনসংখ্যা নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে এবং প্রযুক্তির গতিশীলতার সঙ্গে নিজেদের তৈরি করছে। এ অঞ্চলটি ডিজিটাল পরিষেবা রপ্তানিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার দক্ষতা দেখিয়েছে।
তরুণ জনগোষ্ঠীর উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা যদি সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়, তবে তারা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পারে।