টানা বর্ষণে পানিবন্দি কক্সবাজার, পাহাড় ধসে নিহত ৩

টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজার শহরে পাহাড় ধসের ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ভোরে এক শিশু ও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে কক্সবাজার পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের সিকদার বাজার ও এবিসি ঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এছাড়াও গত তিন সপ্তাহে কক্সবাজার শহর ও উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে ১০ জনসহ ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে ভারী বর্ষণের কারণে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চলাচলে জনগণকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নিহতরা হলেন, শহরের এবিসি ঘোনা এলাকার মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা আক্তার (৩০) এবং সিকদার বাজার এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হাসান (৫)।

কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়দের বরাতে ওসি রকিবুজ্জামান বলেন, বুধবার (১০ জুলাই) মধ্যরাত থেকে কক্সবাজার শহরে টানা মাঝারি ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সিকদার বাজার এলাকায় বসবাসকারি সাইফুল ইসলামের বাড়ির ওপর আকস্মিক পাহাড় ধসে পড়ে। এতে মাটির দেয়াল ভেঙে সাইফুলের ঘুমন্ত শিশু চাপা পড়ে। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে মাটি সরিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন:  তোমার প্রকাশ হোক কুহেলিকা করি উদ্ঘাটন সূর্যের মতন’

এদিকে ভোরে শহরের এবিসি ঘোনা এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় জমিলা আক্তার নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ওসি। জমিলার পরিবারের উদ্বৃতি দিয়ে ওসি রকিবুজ্জামান বলেন, ভোরে জমিলা রান্না ঘরের পাশে ঘুমিয়েছিলেন। তার স্বামী আরেক কক্ষে ঘুমিয়েছিলেন। আকস্মিক পাহাড় ধসে পড়লে জমিলা মাটি চাপা পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের মরদেহ নিজেদের বাড়িতে রয়েছে বলে জানান তিনি।

এছাড়া কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি এলাকায় পাহাড় ধসে সকাল থেকে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। কক্সবাজার শহর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে আসতে প্রচারণা চালাচ্ছে।

আরও পড়ুন:  ব্রাজিল বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারে : প্রধানমন্ত্রী

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল হান্নান বলেন, বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে আজ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এর আগে ৩ জুলাই উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের দুইটি ক্যাম্পে পাহাড় ধসে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। ১৯ জুন উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির ও আশপাশের কয়েকটি জায়গায় পাহাড় ধসে আটজন রোহিঙ্গা ও দুই বাংলাদেশি নিহত হন। এ ঘটনার দুই দিন পর ২১ জুন ভোরে কক্সবাজার শহরের বাদশাঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসে ঘুমন্ত স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *