প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের উদ্দেশে চার দিনের এক দ্বিপক্ষীয় সফরে ঢাকা ত্যাগ করবেন। এই সফর চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের আমন্ত্রণে হচ্ছে এবং এটি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ থেকে ‘কৌশলগত বিস্তৃত সহযোগিতা অংশীদারিত্বে’ উন্নীত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আজ সোমবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওনা হবেন। চীনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় বেইজিং আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছানোর পর প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফর নিয়ে রোববার (৭ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন যে, সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে ২০টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব সমঝোতা স্মারকগুলো অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাত, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল ইকোনমি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতের সহায়তা, বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ নির্মাণ, কৃষিপণ্য রপ্তানি, পিপল টু পিপল কানেকটিভিটি প্রভৃতি বিষয়ে হতে পারে। এছাড়া কিছু প্রকল্পও ঘোষণা করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আগামী ৯ জুলাই সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিন লিকুনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। একইদিন প্রধানমন্ত্রী সাং-গ্রি-লা সার্কেলে অনুষ্ঠিত ‘সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না’ শীর্ষক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন।
ওইদিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রী ১৪তম জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াঙ হুনিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন এবং বিকেলে প্রধানমন্ত্রী ঐতিহ্যবাহী তিয়েনআনমেন স্কয়ারে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
১০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এরপর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলসহ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকের পরে দুই দেশের সরকার প্রধানের উপস্থিতিতে প্রায় ২০টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে এবং কিছু প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
১০ জুলাই বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হবেন। এছাড়া সরকারপ্রধান বেইজিং সফরের সময় বঙ্গবন্ধুর ‘আমার দেখা নয়াচীন’ চাইনিজ ভাষায় অনূদিত বইটির মোড়ক উন্মোচন করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, বাংলাদেশ সফরের সময় বিনিয়োগ ও বাণিজ্য, আর্থিক সহায়তা এবং বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে চীনের সহায়তা কামনা করবে। একই সঙ্গে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ চীনের প্রতি সমর্থন প্রদান করে যাবে।
১১ জুলাই বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন।
