প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি একটি সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন যে, তিনি দেশ বিক্রি করছেন না। তিনি উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ এবং এই স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। ভারতের সাথে রেলপথ ট্রানজিটের সুবিধা নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশের মধ্যে অন্য দেশের ট্রানজিট সুবিধা দিলে কোনো ক্ষতি নেই।
তিনি বলেন, যারা এ বিষয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা মুখরোচক গল্প বানাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন ছিল, বিক্রির ওজন কীভাবে করা হয় এবং বিক্রিটা কীভাবে হয়? তিনি উল্লেখ করেন যে, বিক্রির জন্য ওজন মাপা হয় না, এবং এখন তো ইলেকট্রনিক মেশিন ব্যবহার করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ এবং আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাই অন্য দেশের সাথে ট্রানজিট সুবিধা দেয়া বা নেওয়া কোনো ষড়যন্ত্র নয়, বরং এটি দেশের জন্য উপকারী হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সমালোচকদের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করেছেন যে, যারা ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার সমালোচনা করছে, তাদের জানা উচিত যে, ভারত একমাত্র মিত্র শক্তি যারা আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে এবং রক্ত ঢেলে দিয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে প্রশিক্ষণ পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য মিত্র শক্তির উদাহরণ হিসেবে জাপানে আমেরিকান সৈন্য এবং জার্মানিতে রাশিয়ান সৈন্যের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য। কিন্তু ভারত এই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। ভারতের সৈন্যরা আমাদের পাশে থেকে যুদ্ধ করেছে, কিন্তু যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের সৈন্যদের দেশে ফেরত যেতে বলেছিলেন, তখন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী সাথে সাথে সম্মতি দিয়েছিলেন এবং তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করে বলেন, ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক একটি বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সহযোগিতামূলক সম্পর্ক। এই ধরনের সম্পর্ক এবং সহযোগিতা আমাদের দেশের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, ট্রানজিট সুবিধা দেওয়া কোনো ষড়যন্ত্র নয়, বরং এটি দেশের স্বার্থে করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমালোচকদের উদ্দেশ্যে কড়া মন্তব্য করে বলেছেন, ‘যারা বলে ভারতকে বিক্রি করে দিচ্ছি, তারা নিজেই ভারতের কাছে বিক্রি করা।’ তিনি উল্লেখ করেন যে, সামরিক স্বৈরাচার জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা জিয়া ভারতবিরোধী কথা বলেছে, অথচ তারা ভারতের সাথে গোপনে মিত্রতা করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি নিজেই এসব ঘটনা দেখেছেন এবং জানেন।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, একটি দেশের মধ্যে অন্য দেশের ট্রানজিট দিলে কী ক্ষতি হতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন যে, ভারতের সাথে বন্ধ থাকা রেল যোগাযোগগুলো আস্তে আস্তে পুনরায় চালু করা হচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে চারদিকে দরজা বন্ধ করে রাখার কোনো মানে নেই। ইউরোপের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সেখানে কোনো বর্ডার নেই, এবং তারা একে অপরকে বিক্রি করছে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ। সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা খুলে দিলে সাধারণ মানুষ এর উপকার পাবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও ভালো হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হবে।