এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হলো ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে ক্রমানুসারে। অর্থাৎ, প্রার্থীদের নির্দিষ্ট ক্রম অনুযায়ী প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখতে হবে, যা পরীক্ষা প্রক্রিয়াকে আরও শৃঙ্খলাবদ্ধ করবে।
৪৭তম বিসিএস থেকে আরও একটি পরিবর্তন কার্যকর হবে, যেখানে উত্তরপত্রে নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকবে জায়গা। অর্থাৎ, প্রার্থীদের নির্ধারিত স্থানে উত্তর লিখতে হবে, যা উত্তরপত্র মূল্যায়ন প্রক্রিয়াকে আরও সঠিক ও সহজ করবে।
এই পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে পিএসসি বিসিএস পরীক্ষা প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর ও স্বচ্ছ করতে চায়। এটি প্রার্থীদের জন্যও সহায়ক হবে কারণ এটি পরীক্ষা দেওয়ার পদ্ধতিকে সহজতর করবে এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় সমতা বজায় রাখবে।

পিএসসির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন জানিয়েছেন যে, একটি বিসিএস পরীক্ষা এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করা হয়েছে। যদিও এখনো একটি বিসিএস শেষ করতে দুই বছরের বেশি সময় লাগছে, তবুও নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে এই সময় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। খাতা দেখার সময় দীর্ঘ হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পরীক্ষকদের দায়িত্ব ভাগাভাগি করে দেওয়ার নতুন নিয়মে একজন পরীক্ষক একটি খাতার নির্দিষ্ট নম্বরের প্রশ্নের উত্তরই দেখবেন। এতে করে প্রতিটি খাতার একই ধরনের প্রশ্নের উত্তর একই স্ট্যান্ডার্ডে মূল্যায়িত হবে এবং পরীক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হবেন না। পরীক্ষক দল মোট ১৩ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে, যেখানে ১০ জন প্রশ্নের উত্তর দেখবেন, ২ জন নম্বর যোগ করবেন এবং প্রধান পরীক্ষক বান্ডেলের কিছু খাতা পুনরায় যাচাই করবেন।
৪৬তম বিসিএস থেকে পরীক্ষার্থীদের উত্তর ক্রমানুসারে লিখতে হবে এবং প্রশ্নপত্রে নির্দেশনা থাকবে। ৪৭তম বিসিএস থেকে উত্তরপত্রে নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকবে জায়গা। পরীক্ষার্থীরা চাইলে ক্রমানুসারের বাইরে অন্য প্রশ্নের উত্তর আগে লিখতে পারবেন, তবে খাতায় ক্রম অনুযায়ী উত্তর লেখার জায়গা রাখতে হবে।
এ পরিবর্তনগুলি কার্যকর হলে বিসিএস পরীক্ষা প্রক্রিয়া দ্রুত, সুষ্ঠু এবং আরও স্বচ্ছ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) বিসিএস পরীক্ষা প্রক্রিয়া দ্রুততর ও কার্যকর করতে বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে, যা পরীক্ষার্থীদের জন্য সুবিধাজনক হবে এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে।
উত্তরপত্রের ক্রমানুসারে উত্তর লেখা:
পরীক্ষার্থীরা প্রথমে ১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর লিখছেন, পরে ৭ নম্বর লিখছেন, আবার ৩ নম্বর লিখছেন—এই ধরনের অসংগঠিত উত্তর লেখার কারণে পরীক্ষকদের মূল্যায়নে সময় বেশি লাগে এবং নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিধায় পড়তে হয়। তাই, পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর ক্রমানুসারে লেখার নির্দেশনা দেওয়া হবে, যা খাতা দেখার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করবে।
পরীক্ষকদের পিএসসি কার্যালয়ে বসে খাতা দেখা:
পাইলটিং হিসেবে ৪৫তম বিসিএসের গণিত বিষয়ের খাতা পিএসসি কার্যালয়ে বসে দেখা হয়েছে, যেখানে ৯ দিনে গণিতের খাতা দেখার কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব হয়েছে। যদিও পরিকল্পনা ছিল চার দিনে কাজটি শেষ করার, কিন্তু পরীক্ষকদের সব দল একত্রে না পাওয়ায় কিছুটা সময় বেশি লেগেছে।
খাতা দেখার জন্য পরীক্ষকদের ভাগাভাগি:
খাতা দেখার জন্য প্রতিটি টিমে ১৩ জন সদস্য থাকবেন। ১০ জন পরীক্ষক প্রত্যেকে একটি নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর দেখবেন, ফলে খাতা মূল্যায়ন হবে দ্রুত এবং সঠিক।
বিসিএস পরীক্ষা শেষ করার সময়সীমা কমানোর প্রচেষ্টা:
বর্তমান পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বিসিএস পরীক্ষা এক বছরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন। বর্তমানে পিএসসিতে তিনটি বিসিএসের কার্যক্রম চলমান:
-
- ৪৪তম বিসিএস: লিখিত পরীক্ষা শেষে এখন মৌখিক পরীক্ষা চলছে।
- ৪৫তম বিসিএস: লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখা চলছে।
- ৪৬তম বিসিএস: প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে এবং লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে।
৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর এবং চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়েছে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর, অর্থাৎ একটি বিসিএস শেষ করতে দুই বছর ১১ মাস সময় লেগেছে। করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে পরীক্ষার সময়সূচি ব্যাহত হয়েছিল।
এই পরিবর্তনগুলির মাধ্যমে পিএসসি বিসিএস পরীক্ষা প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত, সুষ্ঠু ও কার্যকর করতে চায়, যা পরীক্ষার্থীদের জন্যও সুবিধাজনক হবে। এছাড়া, খাতা দেখার প্রক্রিয়ায় বৈষম্য কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।