বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে ‘অতিরঞ্জিত রিপোর্ট’ আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। শুক্রবার সংগঠনটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং গণতন্ত্র ও দেশবিরোধী চক্র কর্তৃক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার ক্ষেত্রে পুলিশের সফলতার কারণে ওই গোষ্ঠী বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে প্রতিপক্ষ বিবেচনায় নিয়েছে এবং পুলিশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক সমালোচনায় লিপ্ত রয়েছে।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, স্বাধীনতা ও দেশবিরোধী চক্র তাদের দোসর বিদেশে পলাতক সাইবার সন্ত্রাসীরা ধারাবাহিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত তথ্য প্রকাশ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের চরিত্র হননে ব্যস্ত। তাদেরই অনুকরণে ইদানীং কোনো কোনো গণমাধ্যম বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান ও প্রাক্তন সদস্য সম্পর্কে উদ্দেশ্য প্রণোদিত মানহানিকর নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করছে, যা বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার হীন উদ্দেশ্য বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন গণমাধ্যমে প্রকাশিত পুলিশ সদস্যদের নিয়ে প্রতিবেদনের অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো তথ্যসূত্রের উল্লেখ না থাকার বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করেছে। তাদের মতে, তথ্যসূত্রবিহীন এবং বাস্তবতা বিবর্জিত এ ধরনের অতিকথিত রিপোর্ট পুলিশ সদস্যদের মনোবল ক্ষুণ্ন এবং পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার প্রয়াস চালাচ্ছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, পলাতক সাইবার সন্ত্রাসীদের অনুপ্রেরণায় কতিপয় মিডিয়া অত্যন্ত সচেতনভাবে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কুৎসিত প্রচার চালাচ্ছে। এর ফলে জনসমক্ষে পুলিশের পেশাদার ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এবং পুলিশকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু মিডিয়া হাউস ব্যক্তিগত আক্রোশ ও নিজস্ব স্বার্থ রক্ষায় কিছু পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবমাননাকর নেতিবাচক সংবাদ প্রচার করছে, যা সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী। এমতাবস্থায়, কী কারণে এবং কার উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কিছু মিডিয়া বাংলাদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে এ ধরনের কুৎসা রটনায় লিপ্ত হয়েছে, সেই প্রশ্ন উত্থাপন করা অযৌক্তিক নয়।
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এসব প্রতিবেদনের পিছনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনোভাব রয়েছে বলে মনে করে এবং এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানায়।
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশ পুলিশ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বদা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে আসছে। কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হয় না এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।
সংগঠনটি আরও বলেছে, তারা বিশ্বাস করে যে গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ এবং গঠনমূলক সমালোচনাকে সবসময় স্বাগত জানায়। তবে, খণ্ডিত বা আংশিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা দাবি করেছে যে, গণমাধ্যমে কোনো ঘটনার সামগ্রিক চিত্র উঠে আসা উচিত এবং সত্য উন্মোচিত হওয়া উচিত। তারা চায়, গণমাধ্যমের রিপোর্ট সত্যাশ্রয়ী ও বস্তুনিষ্ঠ হোক।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশ কখনোই গণমাধ্যমের কাছ থেকে অপেশাদারি সাংবাদিকতা প্রত্যাশা করে না। তারা চায়, সমাজের সকলের ন্যায়সংগত অধিকার সুনিশ্চিত হোক, সমাজ থেকে বঞ্চনা দূর হোক এবং মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত হোক। তাদের মতে, প্রিয় স্বদেশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে মর্যাদায় আলোকিত প্রাঙ্গণে উপনীত হোক।
জননিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তিকর রিপোর্ট প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকার জন্য তারা অনুরোধ জানিয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে কোনো ধরনের রিপোর্ট প্রকাশের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন এবং সাংবাদিকতার নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণের জন্য তারা সনির্বন্ধ অনুরোধ জানিয়েছে।