আগামীকাল সোমবার পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, এবার কোরবানির পশুর চাহিদা ১ কোটি ৭ লাখ। সেখানে গরু-ছাগলসহ কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুত আছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। যদিও ঢাকায় কত পশু কোরবানি হবে তা নিয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি।

তবে কয়েক বছরের বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত থেকে জানা যায়, প্রায় ২৫ লাখ পশু দুই সিটি করপোরেশন মিলিয়ে কোরবানি হবে। এর মধ্যে ডিএনসিসি বলছে, এবার ১২ লাখ পশু কোরবানি হতে পারে।

দুই সিটি করপোরেশন থেকেই পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ঈদে রাজধানীতে পশু কোরবানির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। অন্যদিকে পশু কোরবানির ছয় ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

দুই সিটির যত পরিকল্পনা 

আরও পড়ুন:  পবিত্র শবে বরাত কবে, জানা যাবে রোববার

ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘এ বছর ৬ ঘণ্টায় কোরবানির বর্জ্য অপসারণের লক্ষ্যে ডিএনসিসি সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে। ১০ হাজারের অধিক পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োজিত থাকবে। ডিএনসিসির সকল কাউন্সিলর, কর্মকর্তা এবং আমি নিজে মাঠে থাকব। কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করার জন্য কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ওয়ার্ডভিত্তিক তদারকি টিম গঠন করা হয়েছে। হট লাইন নম্বর রয়েছে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারবে।’

ডিএনসিসি বলছে, ঈদের দিনদুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হবে। রাত ৮টার মধ্যে সকল বর্জ্য অপসারণ করা হবে। পশুর হাটের বর্জ্য পরিষ্কারের জন্য এবার আর ইজারাদারদের ওপর ভরসা করা হবে না। সিটি করপোরেশন থেকেই করা হবে।

পশুর রক্ত, বর্জ্য ও আবর্জনা অপসারণে ঈদের দিন ১০ হাজারের বেশি পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োজিত থাকবে উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায়। ডিএনসিসির মেয়র, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা পুরো বিষয়টি তদারকি করবেন।

ঈদের দিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কোরবানির পশুর মালিকদের পলিথিন সরবরাহ করবেন উত্তর সিটির কাউন্সিলররা। পরে বর্জ্যপূর্ণ ওই পলিথিন সংগ্রহ করবেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।

আরও পড়ুন:  চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

উত্তর সিটির কর্মকর্তারা বলছেন, বর্জ্য প্যাকেট করতে ৯ লাখ ৪০ হাজার পলিব্যাগ, এক লাখ বায়োডিগ্রেডেবল পলিব্যাগ বিতরণ করা হবে। একই সময় দুই হাজার ৬৮০ বস্তা ব্লিচিং পাউডার (২৫ কেজির বস্তা), ৯০০ ক্যান স্যাভলন (প্রতি ক্যান ৫ লিটার), সাত হাজার টুকরি ও এক হাজার ২৫০ লিটার ফিনাইল ব্যবহার হবে।

ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ড থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে আমিনবাজার ল্যান্ডফিল্ডে নেওয়া হবে। ল্যান্ডফিল্ডে বর্জ্য নেওয়ার জন্য ৮৫টি ডাম্প ট্রাক, ২১টি পে-লোডার, ১৮টি পানির গাড়ি, দুটি টায়ার ডোজার, পাঁচটি স্কিড লোডার, ১৪০টি পিকআপ ও ৪৫টি কনটেইনার ক্যারিয়ার ব্যবহার করা হবে।

এদিকে দক্ষিণ সিটির ৭৫টি ওয়ার্ডে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে ৯ হাজার ৪৯৭ জন কর্মী কাজ করবেন। সব মিলিয়ে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমে ৫৬০টি যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত থাকবে। বর্জ্য অপসারণের পাশাপাশি যেসব জায়গায় পশু কোরবানি করা হবে, সেখানে ৪০ টন ব্লিচিং পাউডার, ২২২ গ্যালন স্যাভলন ছিটানো হবে। এছাড়া বর্জ্যগুলো প্যাকেট করে রাখতে এক লাখ ৪০ হাজার বায়োডিগ্রেডেবল ব্যাগ বিতরণ করা হবে।

আরও পড়ুন:  প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় সন্তুষ্ট নয় বিএনপি

মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, গত বছরের ন্যায় এবারও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সুতরাং ঈদের দিন যে বর্জ্য সৃষ্টি হবে, সেটা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারিত হবে। পরের দিন যে বর্জ্য সৃষ্টি হবে সেটাও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারিত হবে। আর যেহেতু ঈদের আগের দিন থেকে হাটে পশুর সংখ্যা, হাটের পরিধি ও বিক্রি কমে যায়, সেহেতু ঈদের আগের দিন মধ্যরাত থেকেই আমরা হাটের বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *