দেশবাসীকে অধিক পরিমাণে গাছ লাগিয়ে ‘সবুজ বাংলাদেশ’ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সবুজ বাংলাদেশ গড়তে সারাদেশে আমাদের সাধ্যমতো গাছ লাগাতে হবে।’

আজ শনিবার সকালে গণভবনে আষাঢ় মাসের প্রথম দিনে বাংলাদেশ কৃষক লীগের তিন মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

১৯৮৪ সাল থেকে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আষাঢ়ের প্রথম দিনটি থেকে সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে আসছে। একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযানে অবদানের জন্য কৃষক লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে পুরস্কৃত করেন এবং নেতা-কর্মীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করেন।

পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন দেশে আওয়ামী লীগই প্রথম শুরু করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষক ও কৃষি বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। সেক্ষেত্রে কৃষক লীগের দায়িত্ব অনেক বেশি।

সরকার প্রধান বলেন, খাদ্য মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় চাহিদা। তাই এই খাদ্যের জন্য কারো কাছে যেন হাত পাততে না হয়। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ুর অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করা। যদিও জলবায়ুর ক্ষতি সাধনে বাংলাদেশের কোন ভূমিকা নেই কিন্তু বাংলাদেশ এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত। সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই দক্ষিণাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি উন্নয়নের কর্মসূচি নিয়ে আমরা ওই অঞ্চলের মানুষকে সুরক্ষিত করেছি এবং এটা আরও সুন্দরভাবে আমাদের করতে হবে।

আরও পড়ুন:  ঢাকায় সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া

তিনি বলেন, গাছ আমাদের প্রাণ, এটি আমাদের শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেন দেয়। কাজেই আমরা যতবেশি বৃক্ষ লাগাতে পারবো-এটি আপনাকে ফল দেবে, খাদ্য দেবে আবার অর্থ উপার্জনের পথও সুগম করবে।

প্রত্যেককে একটি করে ফলদ, বনজ ও ঔষুধি গাছ লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইভাবে আমাদের দেশকে যদি আমরা সবসময় সবুজ করে রাখতে পারি তাহলে বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না। সেজন্য সকলকে আমাদের এভাবেই চিন্তা করতে হবে। তবে, একটা জিনিষের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে ফসলি জমি যেন নষ্ট না হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামে আমাদের বহু জায়গা আছে। বেশি করে নদীর পাড়, যেসব এলাকায় ভাঙ্গন হতে পারে সেসব জায়গায় বড় শিকড় সমৃদ্ধ মাটি কামড়ে ধরে রাখার মত গাছ, উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে গাছ লাগাতে হবে এবং বাড়ির চারপাশ এবং ছাদে ছাদ বাগান করতে হবে।

আরও পড়ুন:  রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম হেলালের দাফন সম্পন্ন

তিনি বলেন, বহুতল ভবন আর উন্নয়নের নামে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে শুরু করে গুলশাল-বনানি এলাকায় অতীতে যেসব বড় বড় গাছ ছিল সেগুলো সবই উজাড় হয়েছে। ফলে আগে যে সবুজ ছিল সেটা এখন আর নেই। এখন অবশ্য ছাদ বাগান হচ্ছে, সবাই এদিকে ঝুঁকছে। সেটাও করতে পারেন সবাই। এতে বাড়িটাও ঠান্ডা থাকবে তেমনি নিজের হাতে বাগান করে নিজের গাছের তরিতরকারি খাওয়ার স্বাদই আলাদা।

কর্মসূচি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন।

তিনি বলেন, ’৯৬ সালে সরকারে আসার পর তিনি গণভবনে দুই হাজারের মত গাছ লাগিয়েছিলেন। এরআগের গাছগুলো জাতির পিতার হাতে লাগানো। এরপর আমরা বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ লাগাই এবং লাগাচ্ছি এবং এখানে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করে দেখছি ভালই হয়। হাঁস-মুরগি-গরু-ছাগল সবই আছে আমাদের।

আরও পড়ুন:  আকাশে শাবান মাসের চাঁদ, ২৫ ফেব্রুয়ারি শবে বরাত

সরকার প্রধান বলেন, ‘এখন গণভবন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন এবং একই সঙ্গে একটি খামার বাড়িতে পরিণত হয়েছে।’

তিনি সবাইকে আগাম ঈদ উল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়ে যত্রতত্র কোরবানীর পশু জবাই করে জায়গা যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্যও সকলের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, ‘নিজেদের আবাসস্থল এবং এর চারপাশে নিজেদেরই নজরদারি রাখতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু।

কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীমা শাহরিয়ার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *