২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি জনদুর্ভোগ কমাতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বুধবার (১২ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মন্তব্য করেন যে, সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে জনদুর্ভোগ লাঘবের উদ্দেশ্যে একটি সংকোচনমূলক বাজেট প্রস্তাব করেছে। এই বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং জনদুর্ভোগ কমানোর জন্য সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, কোভিড-১৯ মহামারির পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতিও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাধারণত প্রতিবছর বাজেটের আকার ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, কিন্তু এই বছর বাজেটের আকার বেড়েছে মাত্র ৬ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, সংকোচনমূলক বাজেটেও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে এবং নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তি কমাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। বাজেটে উচ্চ আয়ের মানুষের ওপর উচ্চ কর আরোপ এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য তাদের আয়ের অনুপাত অনুযায়ী কর কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরাফাত বলেন, ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সরকারকে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় জ্বালানি কিনতে অতিরিক্ত ১৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করতে হয়েছে। এই অর্থ যদি জ্বালানির দাম স্থিতিশীল থাকত, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে থাকত এবং এটি বিভিন্ন সংকট থেকে দেশকে রক্ষা করত।
তিনি বলেন, এ বছর ঘাটতি বাজেট হিসেবে ২ দশমিক ৫৬ লাখ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বিদেশী ও দেশীয় উৎস থেকে ঋণ হিসেবে আসবে এবং এটি জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। ঋণ গ্রহণের প্রবণতা বিশ্বব্যাপী রয়েছে, তবে এটি একটি সহনীয় পর্যায়ে রাখা উচিত। বাংলাদেশের বর্তমান ঋণের সঙ্গে জিডিপি অনুপাত ৩৬ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে এবং অনেক উন্নত দেশের তুলনায়ও ভালো।
উল্লেখ্য, গত ৬ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন।
সূত্র: বাসস