রিমালের প্রভাবে উপকূলে ১৫ হাজার মোবাইল টাওয়ার বন্ধ

রিমালের প্রভাবে উপকূলে ১৫ হাজার মোবাইল টাওয়ার বন্ধ

মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এমটব) আজ সোমবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছে। তারা বলেছে, নেটওয়ার্ক দ্রুত ফিরিয়ে আনতে মোবাইল অপারেটররা বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। অপারেটরদের টাওয়ারগুলোতে বিদ্যুৎ নেই। জেনারেটর দিয়ে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, তবে তাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্নের কারণে এসব এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার মোবাইল টাওয়ার বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

রিমালের তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি মোবাইল টাওয়ার নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে বরগুনায়। সেখানে থাকা ৩২৬টির মধ্যে ২৬৬টিই বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া বাগেরহাট ও পিরোজপুরের ৭৮ শতাংশ, ভোলা, সাতক্ষীরা ও ঝালকাঠিতে ৭৭ শতাংশ, পটুয়াখালীতে ৭৬ শতাংশ, বরিশালে ৭১ শতাংশ, গোপালগঞ্জের ৬৬ শতাংশ, নড়াইলে ৬৪ শতাংশ, যশোরে ৫৬ শতাংশ, খুলনায় ৫০ শতাংশ টাওয়ার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন:  প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল বইমেলা উদ্বোধন করবেন

এদিকে, উপকূলীয় এলাকায় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) অপারেটরদের ৩২০টি পপের (পয়েন্ট অব প্রেজেন্স) মধ্যে ২২৫টি অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোলা জেলার ৮৫ শতাংশ পপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ওই অঞ্চলের তিন লাখের বেশি গ্রাহক সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন। সেবা সচল রাখতে তারা পোর্টেবল জেনারেটর ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।

ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) অপারটেররা জানিয়েছে, বিদ্যুৎ না থাকায় ১৫ জেলায় তাদের ১ হাজার ৯০৮টি পপ বন্ধ হয়ে গেছে। ফাইবার অ্যাট হোমের খুলনা, বারিশাল ও চট্টগ্রামের ১ হাজার ৬৯০টি পপের ব্যাটারি ব্যাকআপ শেষ হওয়ায় ৬টি লোকেশন বন্ধ রয়েছে। তবে বাহন লিমিটেডের কোনো পপ বন্ধ হয়নি বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে সংযোগ সচল রাখতে সম্ভব সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে অপারেটরদের তৎপর থাকার নির্দেশনা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। ঘূর্ণিঝড়ে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক কেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা পরে জানাবে অপারেটরটি। আর মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো জানিয়েছে দ্রুত তারা সংযোগ ফেরাতে চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন:  মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস শারফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং সম্মিলিতভাবে কাজ করছি। একটি ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম ও কন্ট্রোল রুম গঠন করা হয়েছে। সংযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকা দ্রুত সংযোগের আওতায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

রবির কমিউনিকেশন বিভাগ থেকে জানানো হয়, ‘তারা ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময়ে গ্রাহকদের জন্য ফ্রি মিনিট এমার্জেন্সি ব্যালান্স এবং অ্যাপে ঘূর্ণিঝড়ের আপডেট দিচ্ছে। ঝড় চলমান থাকায় নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্নতা এবং ক্ষতির বিষয়টি এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না।’

ক্যাবল কাটা পড়া ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উপকূলীয় এলাকার মধ্যে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর এলাকা পুরোপুরি ব্রডব্যান্ড সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক।

আরও পড়ুন:  যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপিত

মোবাইলফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেন, ‘বিটিএসসমূহের পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য বিকল্প জেনারেটর চালু করা জরুরি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর কাছ আত্মীয় এবং সরকারি সহায়তাকারী সংস্থাসমূহের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *