দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি উত্তর-পূর্ব দিকে সরে এসে মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে শুক্রবার (২৪ মে) প্রথম প্রহরে।

আর পরে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে ২৬ মে আঘাত হানতে পারে উপকূলে। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এমন তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অফিস

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি সামান্য উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।

তিনি বলেন, এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে নির্দিষ্ট করে গতিপথ বলা যাবে। কেননা, তার আগে বারবার দিক পরিবর্তন হয়। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলেও দিক পরিবর্তন করে অনেক সময়। কাজেই এটা এখনই বলা সঠিক হবে না।

আরও পড়ুন:  চলতি মাসেই ধেয়ে আসছে একাধিক ঘূর্ণিঝড়

এদিকে, ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী এম শর্মা জানিয়েছেন, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগরে এসে শুক্রবার প্রথম প্রহরে নিম্নচাপে পরিণত হবে। পরে এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে এবং আরও উত্তর-পূর্ব দিকে সরে এসে শনিবার (২৫ মে) প্রথম প্রহরে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। পরে এটি উত্তর দিকে সরে এসে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে রোববার (২৬ মে) দুপুরের দিকে বাংলাদেশ ও পাশের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছবে। আর উপকূলে আঘাত হানতে পারে ওইদিন রাত নয়টার মধ্যে। শনিবার দুপুর থেকেই দেশের উপকূলের কাছাকাছি সাগর ব্যাপক বিক্ষুব্ধ থাকবে।

লঘুচাপটি শনিবার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে নাম হবে রিমাল (Re-Mal)। নামটি ওমানের দেওয়া।

আবহাওয়া অফিস ইতোমধ্যে সব মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকাগুলোকে গভীর সাগরে বিচরণ না করে উপকূলের কাছাকাছি চলে আসার জন্য বলেছে। তবে এখনও বন্দরগুলোয় কোনো সতর্কতা সংকেত তোলা হয়নি।

আরও পড়ুন:  সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে ৩০০ পর্যটক নিয়ে জাহাজ বিকল

আগামী তিনদিনের পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, শুক্রবার খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝাড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজ থাকবে।

শনিবার চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আরও পড়ুন:  ১০ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা

রোববার রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

বর্ধিত দিনের আবহাওয়ার অবস্থা: সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।

বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ঈশ্বরদী ও রাঙ্গামাটিতে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *