যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আমরা দায়মুক্ত হয়েছি : মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে কিছুটা হলেও আমরা দায়মুক্ত হয়েছি, পাপমুক্ত হয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক। শনিবার বেলা ১১টায় জাতীয় জাদুঘরের শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মিলনায়তনে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯৫তম জন্মদিন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, আজকে নিঃসন্দেহে বলা যায়, একটা শুভদিন। সেই মহীয়সী নারীর স্মৃতি জাদুঘর, যেটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছিল। আমরা জাতীয় জাদুঘরের শাখা হিসেবে এর দায়িত্বভার গ্রহণ করে আরেকবার কিছুটা হলেও দায়মুক্ত হলাম। এই যে আন্দোলন-সংগ্রাম কীভাবে হয়েছিল, আমরা হয়তো মাঠে লড়াই-সংগ্রাম করেছি। বৃহত্তর সেদিনের কারাগারে সাত কোটি মানুষ বন্দি থেকে কীভাবে মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করেছিল, দেশের অভ্যন্তরে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিল জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। তাদের একজন পুরোধা নারী ছিলেন এই শহীদ জননী জাহানারা ইমাম

আরও পড়ুন:  মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হলেন ফারুক-ই-আজম

তিনি আরও বলেন, আমাদের একটা বড় ভুল থেকে যায়। আমরা কিছুটা হলেও, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলি, সফলতার কথা বলি। কিন্তু আমাদের অপরপক্ষ, সেদিনের রাজাকার, আল-বদর, আল শামস, এই ঘাতক দালালরা কীভাবে নয় মাস লুণ্ঠন করেছে, অত্যাচার করেছে, নারী নির্যাতন করেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িঘর ছিনিয়ে নিয়েছে, তাদের হত্যা করেছে, পাক-হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করেছে, সেই দিকটা কিন্তু আমরা একেবারেই বলি না। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা যথাযথভাবে না হলেও কিছুটা আলোচনা হয়, কিন্তু ওই দিকটা একেবারেই মুছে যাচ্ছে। কাজেই যুদ্ধাপরাধীদের ইতিহাসটা ব্যাপকভাবে সরকারি ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগেও আলোচনায় আনা উচিত।

সভাপতির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে মুক্তিযোদ্ধাদের ‘মা’ হিসেবে বরণ করে নেওয়া হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে নারীদের আত্মত্যাগের উজ্জ্বল উদাহরণ হলেন আমাদের শহীদ জননী। তিনি ও তার পরিবারের যেই আত্মত্যাগ, সেই ইতিহাস ও আদর্শ আমাদের স্মরণে রাখতে হবে। তুলে ধরতে হবে আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে। আমি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাবো যে, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাহানারা ইমামের লেখা ‘একাত্তরের দিনগুলি’ বইটি যেন পড়ানো হয়।

আরও পড়ুন:  বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাহানারা ইমাম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন সময়ের তোলা ছবির সমন্বয়ে এবং জাহানারা ইমাম জাদুঘরের একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। আমন্ত্রিত অতিথিদের বক্তব্যের পরে জাহানারা ইমামের ছোট ছেলে সাইফ ইমাম জামি জাতীয় জাদুঘরের কাছে জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘরের চাবি হস্তান্তর করেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক ভার্চুয়ালি জাদুঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *