দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো নির্ভর করে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভের ওপর। সাধারণত প্রবাসী আয়, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ থেকে যে ডলার পাওয়া যায় তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি হয়। একইভাবে আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ বা কিস্তি পরিশোধ, বিদেশি কর্মীদের বেতন-ভাতা, পর্যটক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন খাতে রিজার্ভ থেকে ব্যয় হয়।

আয় ও ব্যয়ের পর যে ডলার থেকে যায় সেটাই রিজার্ভে যোগ হয়। কয়েক বছর ধরে দেশের মধ্যে তীব্র ডলার সংকট রয়েছে। জরুরি আমদানির দায় মেটাতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাজার পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিমাত্রা ডলার বিক্রি ও এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দায় পরিশোধে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমছে।

আরও পড়ুন:  ফোন নম্বর দেখা যাবে না হোয়াটসঅ্যাপে, আরো আসছে যে পরিবর্তন

চলতি মাসের ৬ মার্চ দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৩৪ কোটি ডলার। বুধবার (২০ মার্চ) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫২৫ কোটি ডলারে। আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ এক হাজার ৯৯৯ কোটি বা ১৯ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারে। যা গত ৬ মার্চ ছিল ২ হাজার ১১৫ কোটি ডলার। সে হিসাবে ১৪ দিনে গ্রস (মোট) রিজার্ভ কমেছে ১০৯ কোটি ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী কমেছে ১১৬ কোটি ডলার।

এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের (প্রতি মাসে ৬ বিলিয়ন ধরে) আমদানি ব্যয় মেটানে যাবে। তবে, এ দুই হিসাবের বাইরে আরও একটি হিসাব করা হয় যা শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয়ে থাকে। সে হিসাবে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ ১৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। এর আগে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে গ্রস রিজার্ভ ছিল প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমকি ৩৭ বিলিয়ন ডলার।

আরও পড়ুন:  বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ। তবে দেশের মধ্যে ডলার সংকট চলছে। এ সংকট কাটাতে রিজার্ভ থেকে বাজারে ডলার ছাড়া হচ্ছে। আবার চলতি মাসে আকুর মাধ্যমে আমদানি দায় পরিশোধ হয়েছে। অন্যদিকে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ সাম্প্রতিক কমেছে। এসব কারণে রিজার্ভের পরিমাণও কিছুটা কমছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *