কেমন হবে স্বাস্থ্যকর ইফতারি

তারাবির নামাজ পড়লে ব্যায়ামের দরকার নেই। তবে সম্ভব হলে ইফতারের পরে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটবেন অথবা ঘরে বসে কিছু ব্যায়াম করে নেবেন। অবশ্যই তারাবির নামাজ পড়বেন, এতে ইবাদতের পাশাপাশি ব্যায়ামের কাজও হয়ে যাবে।

রোজাদার ব্যক্তির জন্য খুব আনন্দের উপলক্ষ হচ্ছে ইফতার। শরীরের সুস্থতা ও পুষ্টির চাহিদার কথা বিবেচনা করলেও স্বাস্থ্যকর ইফতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইফতারের কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে চলতে থাকে প্রস্তুতি। সারা দিনের সব ক্লান্তি যেন এর আয়োজনের আগেই উড়ে যায়। তবে সারা দিন যেহেতু না খেয়ে থাকতে হয়, তাই ইফতারিটা অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত হতে হবে। অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে অ্যাসিডিটিসহ অন্যান্য সমস্যা তৈরি হতে পারে। এর ফলে পরের দিনের রোজা রাখাটা বেশ কষ্টদায়ক হতে পারে।

আমরা রোজার উপকারিতার অটোফেজির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা সম্পর্কে জানি। কিন্তু অটোফেজির এই উপকারিতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে আপনার অস্বাস্থ্যকর ইফতারের কারণে। তাই এর আয়োজনে সতর্ক থাকতে হবে। ইফতারের আয়োজনে বাড়ির সব সদস্যের কথা বিবেচনায় রাখতে হবে। শিশু, বয়স্ক কিংবা অসুস্থ ব্যক্তিদের কথা অবশ্যই বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখতে হবে।

আরও পড়ুন:  প্রথমবার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করছে বাংলাদেশ-জাপান

পানি ও পানীয়

পানির চাহিদা বেশি থাকবে বলে ইফতারিতে এমন কিছু পানীয় রাখবেন, যেগুলো পিপাসা মেটানোর পাশাপাশি অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের চাহিদাও মেটায় এবং দ্রুত শরীরে শক্তি জোগাতে পারে।

শরবতের কথা এলে সবার আগে লেবু-চিনির শরবতের কথা মাথায় আসে। কিন্তু না, ইফতারে চিনির শরবত খাবেন না। প্রথমত চিনি কখনোই স্বাস্থ্যকর নয়। এটি দিয়ে বানানো শরবতে কার্বোহাইড্রেট ছাড়া অন্য কিছু পাওয়া যায় না। আপনি ফলের শরবত খেতে পারেন। পেঁপে, বেল, তরমুজ, আনারস বা মাল্টার জুস খাবেন। অথবা টক দইয়ের সঙ্গে কিছু বাদাম আর স্ট্রবেরি বা কলাসহ ব্লেন্ড করে লাচ্ছি খেতে পারেন।

ফলের রসে অল্প পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনির পাশাপাশি সব ধরনের ভিটামিন মিনারেল পাওয়া যায়। ভিটামিন এ, বি, সি, ফোলেট ছড়াও পটাশিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেশিয়াম, কোবাল্ট ও আঁশের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে এখানে। ফলের রসে থাকা প্রাকৃতিক চিনি আপনাকে শক্তি জোগাবে। আর অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেল ক্লান্তি দূর করবে নিমেষেই। আঁশ ক্ষুধার অনুভূতি কমাতে সাহায্য করবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করবে।

আরও পড়ুন:  শ্রম আইন বাস্তবায়ন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ: হাস

খেজুর ও অন্যান্য ফল

খেজুর ছাড়া ইফতার যেন অসম্পূর্ণ। সেই সঙ্গে খেজুর একটি উচ্চ ক্যালরি ও আঁশযুক্ত ফল। এটি শরীরে শক্তি সরবরাহের পাশাপাশি অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের চাহিদাও পূরণ করবে। ইফতারে খেজুরসহ চিবিয়ে খেতে হয় এমন অন্যান্য ফল বেশি রাখুন। যেমন—আপেল, পেয়ারা, নাসপাতি, বরই, তরমুজ ইত্যাদি।

ভারী খাবার

ইফতারির আর একটা অপরিহার্য উপাদান হচ্ছে হালিম। একটুখানি হালিম খেলে সারা দিনের ক্লান্ত পেশিগুলো সতেজ হয়ে উঠবে। হালিমের পরিবর্তে চিকেন ভেজিটেবল স্যুপ খেতে পারেন। তবে কিডনি রোগীরা হালিম খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

ইফতারে অনেকেই ভাজাপোড়া খাবার পছন্দ করেন, যা স্বাস্থ্যকর নয়। জিলাপি, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, নিমকি, পাকোড়াসহ ডালের বেসন দিয়ে তৈরি খাবার না খাওয়াই ভালো। পুরো মাস এসব খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াসহ অন্যান্য শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এগুলো একেবারে বাদ দিতে না পারলে দিনে একটা আইটেম খাবেন। তবে না খাওয়াই উত্তম।

আরও পড়ুন:  আবু সাঈদের বাড়িতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ইফতারে একটু ভারী খাবার হিসেবে চিড়া, টক দই ও কলা খেতে পারেন। অথবা রুটি, হালিম সবজিও খাওয়া যেতে পারে। আর যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে, তাদের ইফতারে ভাত, মাছ, সবজি, ডাল খাওয়া উত্তম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *