পবিত্র রমজানের বরকতময় প্রথম জুমা আজ

আজ পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম জুমা। রমজানের প্রথম রহমতের দশকের চতুর্থ রোজায় পড়েছে ফজিলতপূর্ণ এ জুমার দিন। জুমার দিনের গুরুত্ব নিয়ে কোরআন ও হাদিসে একাধিক আয়াত ও হাদিস বর্ণিত হয়েছে। জুমার গুরুত্ব আল্লাহ তায়ালার কাছে এত বেশি যে, কোরআনে ‘জুমা’ নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাজিল করা হয়েছে।

আল্লাহ তা’আলা কোরআনে ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে। (সূরা জুমা- ০৯)।

দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দিন: হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী সা: বলেছেন, পৃথিবীর যত দিন সূর্য উদিত হবে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো শুক্রবার। এ দিনে আদম আ:-কে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে। এ দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছিল। সর্বশেষ কেয়ামত সংঘটিত হবে শুক্রবার দিনে (মুসলিম-৮৫৪)।

অন্য হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, জুমার দিন দিবসসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)।

আরও পড়ুন:  বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি হচ্ছে মানুষকে পুড়িয়ে মারার রাজনীতি : প্রধানমন্ত্রী

শুক্রবার মুসলমানদের ঈদের দিন: রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, এই দিন অর্থাৎ জুমার দিনকে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন বানিয়েছেন (সহিহ ইবনে মাজাহ-৯০৮)।

গুনাহ মাফের দিন: রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করবে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করবে, যদি তার নিকট থাকে। তারপর জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়। নির্ধারিত নামাজ আদায় করে। তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে। তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমার দিন থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব সগিরা গুনাহের জন্য কাফ্ফারা হবে (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)।

প্রতি কদমে এক বছরের নেকি: নবীজী সা. ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিনে উত্তমরূপে গোসল করে আগে আগে মসজিদে যায় এবং বাহনে না চড়ে হেঁটে যায়। ইমামের কাছাকাছি বসে মনোযোগ দিয়ে ইমামের আলোচনা শোনে, অনর্থক কাজ না করে, তবে তার প্রতি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা এক বছর সিয়াম ও কিয়ামের সাওয়াব দান করেন (তিরমিজি-হাদিস : ৪৫৬)।

আরও পড়ুন:  মস্কোতে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

কবরের আজাব থেকে মুক্তিহাদিস শরিফে এরশাদ হয়েছে, কোনো মুসলমান শুক্রবারে রাতে কিংবা দিনে ইন্তেকাল করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন (তিরমিজি-১০৭৪)।

এই দিনের আমল ও তাৎপর্য
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, জুমার দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি মোটাতাজা উট কোরবানি করে। এরপর যে আসে সে ওই ব্যক্তি যে একটি গাভী কোরবানি করে। এরপর আগমনকারী ব্যক্তি মুরগি দানকারীর মতো। তারপর ইমাম যখন বের হন তখন ফেরেশতাগণ তাদের লেখা বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগসহকারে খুতবা শুনতে থাকেন (বুখারি, হাদিস : ৯২৯)।

আবু সাঈদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে, তার জন্য দুই জুমা পর্যন্ত নূর উজ্জ্বল করা হবে (আমালুল ইয়াওমী ওয়াল লাইল, হাদিস : ৯৫২)।

আরও পড়ুন:  অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরব আমিরাতকে বিনিয়োগে আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা তোমাদের পাঠকৃত দরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়। (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর ১০৪৭)।

রাসুল (সা.) আরো বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহতায়ালা রমজান মাসের প্রত্যেক দিন ও রাতে অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। এবং প্রত্যেক মুমিন বান্দার একটি করে দোয়া কবুল করেন।’ (মুসনাদে আহমদ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *